প্রকল্পের নামে বনাঞ্চলের গাছ কাটায় হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা
প্রকল্পে বাস্তবায়ন ও উন্নয়নের নামে দেশের সব বনাঞ্চল ও বনভূমি বা রাস্তা থেকে গাছ কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন হাইকোর্ট। আদালত অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেন।
একই সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গাছ কাটা ও লাগানোর বিষয়ে একটি কর্মপরিকল্পনা (টাইম বাউন্ড অ্যাকশন প্লান) প্রতিবেদন আকারে ছয় মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আদেশের বিষয়টি অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন।
অপর এক রুলে প্রকল্পের নামে দেশের সব বনাঞ্চল ও বনভূমি থেকে গাছ কাটা বন্ধ করতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং অবশিষ্ট বন সংরক্ষণের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ, সংসদ সচিবালয়, পরিবেশ, স্থানীয় সরকার, সড়ক, যুব ও ক্রীড়া, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান বন সংরক্ষক, মানিকগঞ্জ, কক্সবাজার ও গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এবং এসপিসহ ২০ জন বিবাদীকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলার) করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (১১ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও সাইদ আহমেদ কবির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বৃক্ষ সংরক্ষণ ব্যবস্থা অধিকতর কার্যকর করার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে বৃক্ষ সংরক্ষণ আইন নামে ২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি একটি বিল উত্থাপন করে সরকার। পরবর্তীতে তা বাতিল করা হয়। এ আইনের খসড়া ২০১৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভায় আবারও অনুমোদিত হয়। গত বছর এ খসড়া আবারও বাতিল করা হয়।
তিনি বলেন, সরকার ইচ্ছা মতো বনাঞ্চল উজাড় করে একের পর এক প্রকল্প গ্রহণ করছে। এ নিয়ে গত বছর ১৪ আগস্ট সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর বেলা গত ২০ ফেব্রুয়ারি প্রকল্প এবং উন্ননের নামে বনাঞ্চলের এবং রাস্তার পাশের গাছ কাটা বন্ধ করার জন্য আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। আইনি নোটিশের জবাব না পেয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট আবেদন করে বেলা।
রিট আবেদনে বলা হয়, বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদফতরের আপত্তি উপেক্ষা করে কক্সবাজারের মহেশখালীতে ১৯১ দশমিক ২৫ একর জমির ওপর তেলের ডিপো নির্মাণে জন্য সরকারি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
এছাড়া গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নে ২ দশমিক ৩৪ একর বনভূমি কেটে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এফএইচ/আরএস/জেআইএম