নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে : প্রধান বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৩৪ পিএম, ০৬ মার্চ ২০১৯

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, দেশের বিভিন্ন আদালতে নারী বিচারক ও আইনজীবীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে- যা সত্যিই আশাব্যঞ্জক।

এছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে। সেজন্য সব ক্ষেত্রে নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

বুধবার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট গার্ডেনে নারী আইনজীবী কর্তৃক আয়োজিত ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, নারীদের অবদানের স্বীকৃতি প্রদান এবং তাদের প্রতি সম্মান জানানোর লক্ষ্যে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হয়। এ দিনটি আমি অত্যন্ত গুরুত্ববহ এবং মর্যাদাপূর্ণ বলে মনে করি। নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক অধিকার নিশ্চিত করতে বিশ্ববাসী আজ ঐক্যবদ্ধ। এ দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে নারীদের এগিয়ে চলতে হবে এবং নেতৃত্বদানে বিকশিত হতে হবে। সেজন্য সর্বস্তরে নিশ্চিত করতে হবে নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ।

তিনি বলেন, নারীর অধিকার আদায় এবং সমমর্যাদার বিষয়টি আমাদের রাষ্ট্রীয় চিন্তা ও নীতিতেও প্রতিভাত হচ্ছে। বাংলাদেশে সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগের ফলে সব ক্ষেত্রে নারীর প্রভৃত উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন আদালতে নারী বিচারক ও আইনজীবীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, যা সত্যিই আশাব্যঞ্জক। নারীরা ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজেদের সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত করতে সক্ষম হয়েছে।

Chief Justice

সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, নারীদের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে বর্তমান জেন্ডার ইক্যুলিটি অ্যান্ড জেন্ডার জাস্টিসের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের রোল মডেল হতে পারে। বাংলাদেশের বিচার বিভাগ নারী-সংক্রান্ত ইস্যুতে অনেক সংবেদনশীল, যা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রায়ে প্রতিফলিত হয়েছে। পারিবারিক সহযোগিতা ও ইতিবাচক সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বিচার বিভাগ ও আইন পেশায় নারীর বলিষ্ঠ পদচারণা বাড়তে পারে। কাজেই ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হলে নারীদের নবউদ্যমে পেশাদারিত্ব অর্জনের মাধ্যমে নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, নারীদের এগিয়ে যাওয়ার গতি এখন ভারত থেকে আমাদের বেশি। এদেশের বিভিন্ন দলের নেতৃত্বে রয়েছেন নারী। মন্ত্রণালয়ে রয়েছে নারী। গত ১০ বছরে নারী জাগরণের গতি অনেকটা বেড়েছে। এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে এটাই আমরা বিশ্বাস করি।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, পুরুষ ছাড়া নারী কিন্তু অসম্পূর্ণ। এটা আমরা হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করি। আমার মনে হয় আপনারাও করেন। এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় সবাইকে ধন্যবাদ দেন।

হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নাইমা হায়দার নারী দিবসের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, আমি নারী দিবস বলে আসলে কোন কিছুতে বিশ্বাস করি না। কেন করি না তার যুক্তি হলো ৮ মার্চ পেরিয়ে গেলে কিন্তু নারী নিয়ে আর আলোচনা করি না। নারীর প্রতি সহিংসতা হয়, তা নিয়ে আলোচনা করি না। এ কারণে আমি সব সময় নারীর অধিকার নয়, মানবাধিকার নিয়ে কথা বলি। তবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনে অবশ্যই একটি গুরুত্ব আছে। আমি বলব প্রত্যেকটা দিনই হবে নারী ও নর দিবস।

তিনি বলেন, আমাদের সহকর্মী পুরুষরা যদি আমাদের সহযোগিতা না করতো তাহলে আমরা কেউই এ পর্যন্ত পৌঁছতে পারতাম না। আমি এ পর্যন্ত এসেছি, আমার বাবা-মা, ভাই-বোন ও বন্ধুদের সহযোগিতায়। এ কারণে বলবো সবাই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

পরে প্রধান বিচারপতি কেক কেটে নারী দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।

এ সময় সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, সিনিয়র আইনজীবী ও নারী আইনজীবী হোসনে আরা বাবলী, সানজিদা খানম, জান্নাতুল ফেরদৌসী রূপা, জেসমিন সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।

এফএইচ/জেএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।