ঠাকুরগাঁওয়ের ঘটনায় পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চেয়ে রিট
গরু জব্দ করা নিয়ে সংঘর্ষে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) গুলিতে নিহতদের তিন জনের পরিবার ও আহতদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জনস্বার্থে রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তনয় কুমার সাহা। রিটের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী নিজেই।
রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, বিজিবি মহাপরিচালক ও বিজিবির ৫০ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসারকে বিবাদী করা হয়েছে। একইসঙ্গে রিটে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে রুলও চাওয়া হয়েছে।
বিজিবির-৫০ অপারেশন থেকে নিরস্ত্র মানুষের উপর গুলিবর্ষণ করে তিনজন হত্যা এবং কমপক্ষে ২০ জনকে গুরুতর আহত করা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং অপারেশনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
এছাড়া ১২ ফেব্রুয়ারি বিজিবির অপারেশনে সংশ্লিষ্ট বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নিদের্শনা দেওয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রিট আবেদনে।
রিটে বলা হয়েছে, দেশের সীমান্ত রক্ষা ও সীমান্তের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিজিবি। তাদের অর্পিত সেই দায়িত্ব রেখে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে তারা গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন : কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, ঠাকুরগাঁও প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ রিট আবেদনের শুনানি হবে বলেও জানান আইনজীবী।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে বিজিবির সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন।
নিহতরা হলেন হরিপুর উপজেলার রুহিয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে নবাব উদ্দিন (৩৫), একই গ্রামের জহির উদ্দিনের ছেলে সাদেক (৪৫) ও বহরমপুর গ্রামের নূরল ইসলামের ছেলে জয়নুল (১২)।
এলাকাবাসী জানায়, বহরমপুর গ্রামের মাহাবুব আলী গত ৬ মাস আগে একটি গরু ক্রয় করেন। সেই গরু মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় যাদুরানী বাজারে বিক্রি করার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। এ সময় বেতনা ক্যাম্পের বিজিবির সদস্যরা ভারতীয় গরু মনে করে ক্যাম্পে গরুটি নিয়ে যাওয়ার জন্য মাহাবুবের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে গেলে মাহাবুবের পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। পরে বিজিবি গুলি ছুড়লে যাদুরানী বাজারের উদ্দেশে আসা দুইজন পথচারীসহ তিনজন নিহত হন। আহত হন বিজিবি সদস্যসহ অন্তত ১৫ জন।
তবে বিজিবি বলছে চোরাকারবারিরা পরিকল্পিতভাবে জব্দকৃত গরু বিজিবির কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। তারা ধারালো অস্ত্র নিয়ে বিজিবি সদস্যদের ওপর হামলা করলে নিজেদের জীবন রক্ষার্থে গুলি চালাতে বাধ্য হয় বিজিবি। বিজিবির ছোড়া গুলিতে তিন চোরাকারবারি নিহত ও বিজিবির পাঁচ সদস্য আহত হয়।
এফএইচ/এনএফ/এসএইচএস/জেআইএম