রাজীব-দিয়ার মৃত্যু : সাক্ষ্য দিলেন প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা
রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা ক্যান্টনমেন্ট থানার উপ-পরিদর্শক রিয়াজ আহম্মেদ।
সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েসের আদালতে তিনি সাক্ষ্য দেন। তিনি আংশিক জবানবন্দি প্রদান করায় পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১৮ মার্চ পরবর্তী দিন ধার্য করেন আদালত।
রিয়াজ উদ্দিন মামলাটির প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা। এরপর ডিবির পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলামকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্বভার দেয়া হয়। পরে তিনি মামলাটি তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
গত বছরের ২৫ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েস আসামিদের অব্যাহতির আবেদন না মঞ্জুর করে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
গত ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম অভিযোগপত্রটি জমা দেন। এতে ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
তারা হলেন- জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের মালিক শাহাদাত হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম, দুই বাসচালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং তাদের দুই সহকারী এনায়েত হোসেন ও কাজী আসাদ। তাদের মধ্যে শাহাদাত হোসেনের মালিকানাধীন বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। কাজী আসাদ ও জাহাঙ্গীর আলম এখনও পলাতক।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, গত ২৯ জুলাই দুপুরে চালক ও তাদের সহকারীরা বেশি যাত্রী ওঠানোর লোভে যাত্রীদের কথা না শুনে ও তাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে জিল্লুর রহমান উড়াল সড়কের ঢালের সামনে রাস্তা ব্লক করে দাঁড়ায়। এ সময় চালক মাসুম বিল্লাহ সেখানে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ১৪-১৫ জন ছাত্রছাত্রীর ওপর বাস উঠিয়ে দেন। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিক্ষার্থী নিহত ও ৯ জন আহত হয়।
নিহতরা হলো- ওই কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব (১৭) ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম (১৬)। সেদিন বাস দুটি দুই থেকে তিনবার একে অপরকে ওভারটেক করে।
দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর মিরপুর ও বরগুনায় অভিযান চালিয়ে জাবালে নূরের তিন বাসের তিন চালক এবং তাদের দুই সহযোগী এনায়েত ও রিপনকে গ্রেফতার করে র্যাব-১। পরে গত ১ আগস্ট সন্ধ্যায় র্যাবের পক্ষ থেকে জাবালে নূরের একটি বাসের মালিক শাহাদাত হোসেনকে (৬০) গ্রেফতারের খবর জানানো হয়। গ্রেফতার হওয়া ছয়জনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
জাবালে নূরের যে তিন বাসের রেষারেষিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে, সেগুলোর নিবন্ধন নম্বর হলো ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭, ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৬৫৭ এবং ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৫৮০। এর মধ্যে ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭ নম্বর বাসের চাপায় নিহত হয় দুই শিক্ষার্থী। বাসটি চালাচ্ছিলেন মাসুম বিল্লাহ।
এছাড়া ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৬৫৭ নম্বর বাসের চালক ছিলেন জুবায়ের এবং ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৫৮০ নম্বরধারী বাসটির চালক ছিলেন সোহাগ।
জেএ/আরএস/পিআর