মানুষ শুধু টাকার পেছনে ঘুরছে, দেশ নিয়ে কেউ ভাবছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৪৬ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

মানুষ এখন শুধু টাকার পেছনে ঘুরছে, দেশ ও দেশের মানুষ নিয়ে কেউ ভাবছেন না। স্বাস্থ্যই যদি ঠিক না থাকে, তাহলে এত টাকা-পয়সা দিয়ে হবেটা কী? খাদ্যে ভেজাল মেশানোর অপরাধকে ‘একটি বড় দুর্নীতি’ বলেও মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। এ ধরনের ভেজালে মানুষের কিডনি, লিভার নষ্ট হচ্ছে; ক্যানসার হচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন আদালত।

দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যে ভেজাল বিষয়ে কয়েকটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনা হলে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এ কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।

প্রতিবেদনগুলো সোমবার আদালতের নজরে আনেন দুদকের আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না।

ওই প্রতিবেদনের ওপর শুনানিকালে আদালত বলেন, ‘খাদ্যে ভেজাল মেশানো একটি বড় দুর্নীতি। এ ধরনের ভেজালে মানুষের কিডনি ও লিভার নষ্ট হচ্ছে, ক্যানসার হচ্ছে। মানুষ এখন শুধু টাকার পেছনে ঘুরছে। দেশ ও দেশের মানুষ নিয়ে কেউ ভাবছেন না।’

শুনানি শেষে ঢাকাসহ সারাদেশের বাজারে কোন কোন কোম্পানির দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্যে কী পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া, কীটনাশক এবং সিসা মেশানো রয়েছে, তা নিরূপণের জন্য একটি জরিপ পরিচালনার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয় এবং মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ৩ মার্চ দিন নির্ধারণ করা হয়।

আইনজীবী এএম আমিন উদ্দিন মানকি জানান, সোমবার দৈনিক প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও দৈনিক কালের কণ্ঠে দুধ-দইয়ে অ্যান্টবায়োটিক অনুজীব,কীটনাশক, সিসা, Lead, pesticides in milk গরুর দুধেও বিষের ভয়, শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ পায়।

বিষয়টি অবগত হয়ে আদালত দুধ ও দইয়ের উৎপাদনকারী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কেন সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না সেই মর্মে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে স্ব প্রণোদিত হয়ে রুল জারি করে কারণ জানতে চান। এই মর্মে চার সপ্তাহের রুল জারি করেন এবং ১৫ দিনের মধ্যে এই বিষয়ে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হলো তার অগ্রগতি প্রতিবেদন জানাতে আদেশ দেন।

রুলের বিষয়ে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, খাদ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, মৎস্য ও প্রাণী সচিব ও কৃষি সচিব চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দেবেন। একই সময়ে দুদকের চেয়ারম্যান এই বিষয়ে কী ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছেন তাও জানানোর আদেশ হয়।

উল্লেখ্য, ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি তাদের এক গবেষণা তথ্য অনুযায়ী গরুর দুধে অ্যান্টিবায়োটিক, দইয়ে ক্ষতিকর সিসা ও গো খাদ্যেও মাত্রারিক্ত কীটনাশকসহ নানা ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পাওয়া গেছে বলে জানান। এ সময় আদালত আশ্চর্যবোধ করেন।

এফএইচ/জেএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।