৩৩ বছরের পুরনো স্কুল কেন বন্ধ, জানতে চান হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:০৮ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০১৯

নারায়ণগঞ্জে ৩৩ বছরের পুরনো ড্রেজার জুনিয়র হাই স্কুল বন্ধের কারণ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ও নারায়ণগঞ্জের ড্রেজার অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীকে এ প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ ছাড়াও মামলার পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত। একই সঙ্গে স্কুলটি বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না -তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।

আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে পানি সম্পদ মন্ত্রলয়ের সচিব, শিক্ষা মন্ত্রলয়ের সচিব, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক, নারায়ণগঞ্জের ড্রেজার পরিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীসহ ১০ জনকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী ব্যারিস্টার কাজী আখতার হোসাইন এবং তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মহিউদ্দিন মো. হানিফ ফরহাদ ও এ এইচ এম রেহানুল কবীর রনি। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।

গত ৩০ জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘৩৩ বছরের পুরনো স্কুল বন্ধ ঘোষণা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে ওই সংবাদটি সংযুক্ত করে জনস্বার্থে গত ৩০ জানুয়ারি হাইকোর্টে এ রিট দায়ের করেন আইনজীবী কাজী আক্তার হোসেন।

রিটে পানি সম্পদ মন্ত্রলয়ের সচিব, শিক্ষা মন্ত্রলয়ের সচিব, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক, নারায়ণগঞ্জের ড্রেজার পরিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়।

প্রকাশিত ওই সংবাদে উল্লেখ করা হয়, ১৫ বছরের কিশোরী সোনিয়া আক্তার। এক মাস আগেও তার পরিচয় ছিল স্কুল শিক্ষার্থী। এখন সে তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক। নারায়ণগঞ্জের একজন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর মৌখিক নির্দেশনায় ৩৩ বছরের পুরনো ড্রেজার জুনিয়র হাইস্কুল বন্ধ ঘোষণার পর সোনিয়ার মতো শতাধিক শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে।

বিদ্যালয়টির শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮৬ সালে ড্রেজার পরিদফতরে নিজস্ব খরচে পড়াশোনার সুযোগ থাকায় আশপাশের এলাকার হতদরিদ্র পরিবারের প্রায় আড়াইশ ছেলে-মেয়ে এখানে পড়াশোনা করে আসছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের বিকল্প ব্যবস্থা না করেই গত ডিসেম্বরে ড্রেজার পরিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শামসুদ্দীন আহমদ মৌখিকভাবে বিদ্যালয়টি বন্ধের ঘোষণা দেন। প্রকৌশলীর সিদ্ধান্তের ফলে অর্থাভাবে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে না পেরে বিদ্যালয়টির শতাধিক শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। অধিকাংশ শিক্ষার্থীই এখন শিশুশ্রমিক হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছে।

এফএইচ/আরএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।