ট্রাইব্যুনাল থেকে জামিন পেলেন বিএনপি নেতা


প্রকাশিত: ১১:৪৪ এএম, ২৩ আগস্ট ২০১৫

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক কক্সবাজার মহেশখালী বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রশিদ মিয়াকে (৮৬) বয়স ও অসুস্থতার কারণে জামিন দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুানাল থেকে দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তি হিসেবে জামিন পান তিনি।

এর আগে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক বিএনপি নেতা আব্দুল আলীম  (৮৩) ট্রাইব্যুলাল থেকে জামিন পেয়েছিলেন। পরে মামলা আপিলে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকাকালে মারা যান  আলিম।

একইসঙ্গে কক্সবাজারের মহেশখালীর ছয় আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আগামী ১১ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। সঙ্গে সঙ্গে মামলার আসামি আব্দুর রশিদ মিয়াকে (৮৬) স্বাস্থ্যগত কারণে জামিন দিয়েছেন আদালত।

রোববার ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতি মো. মুজিবুর রতহমান মিয়া ও মো. শাহিনুর ইসলাম এই আদেশ দেন। মামলায় অন্যান্য আসামিরা হলেন- মজিবুর রহমান, নুরুল ইসলাম, ওসমান গনি, জিন্নাত আলী ও বাদশা মিয়া।

আসামি রশিদের জামিনের বিষয়ে প্রসিকিউটর রানা দাশ গুপ্ত বলেন, ‘স্বাস্থ্যগত কারণে আসামি আব্দুর রশিদ মিয়াকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেয়া হয়েছে। ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় ঢাকায় তার এক নাতির (মেয়ের ঘরের ছেলে) বাসায় থাকার শর্তে জামিন দেন ট্রাইব্যুনাল। রশিদের ওই নাতির বাসা পল্লবী থানার মিরপুর-১২তে।

রানাদাস গুপ্ত বলেন, ‘কক্সবাজারের মহেশখালীতে সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তদন্ত চলছে। এই মামলায় ইতোমধ্যে ৭জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চিফ প্রসিকিউটরের কাছে তদন্ত শেষ করার জন্য ৪৫ দিন সময় চেয়েছিল। এ বিষয়টি আদালতের নজরে এনে ৪৫দিন সময় চেয়েছিলাম। তা গ্রহণ করে ১১ অক্টোবর পরবর্তিত দিন ঠিক করেন আদালত।’

মামলায় অভিযুক্ত ৭৫ জনের মধ্যে ট্রাইব্যুনাল-২ এর নির্দেশে গত ২৪ মে আটক হওয়া চারজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন- জিন্নাত আলী, মৌলভী ওসমান গণি, নুরুল ইসলাম, বাদশা মিয়া ও শামসুজ্জোহা। পরে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়।
 
ট্রাইব্যুনাল মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারির পর গ্রেফতার করা হয় মোট সাতজনকে।

বাকি দুজন হলেন- এলডিপির নেতা কক্সবাজার চেম্বারের সাবেক সভাপতি সালামত খান উল্লাহ খান ওরফে আঞ্জুবর ওরফে পঁচাইয়া রাজাকার এবং বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ রশিদ মিয়া।
 
কক্সবাজার জেলার সালামত উল্লাহ খান ও মোহাম্মদ রশিদ মিয়ার সঙ্গে অপর আসামি মৌলভী জাকারিয়া সিকদারের বিরুদ্ধে গত ১ মার্চ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। ওইদিনই দুপুরে সালামত ও রশিদকে গ্রেফতার করে স্থানীয় পুলিশ। ২ মার্চ তাদেরকে হাজির করা হলে কারাগারে পাঠায় ট্রাইব্যুনাল। এর পর থেকে কাশিপুর কারাগারে রাখা হয় রশিদসহ বাকি আসামিদের।
 
প্রসিকিউটর রানাদাস বলেন, অভিযু্ক্ত মোহাম্মদ রশিদ মিয়া ও সালামত উল্লাহ খানের মামলার তদন্ত করতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত আরো ৭৫ জনের নাম পায়। তবে এদের মধ্যে ৩২ জন ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন। ফলে এ মামলায় আসামি করা হতে পারে ৪৩ জনকে।
 
গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মধ্যে আরো ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  বাকিদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টা চলছে। তবে উক্ত ৭ জনের মধ্যে একজন মৃত্যুবরণ করেছেন। আজ একজনকে জামিন দেওয়া হয়। বাকি ৫ জন এখন কারাগারে রয়েছেন।  

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১১ সালের ২৭ মার্চ জয়পুরহাটের বাড়ি থেকে আলীমকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর ৩১ মার্চ তাকে এক লাখ টাকা মুচলেকায় ঢাকার বাসায় থাকার শর্তে জামিন দেন ট্রাইব্যুনাল। পরবর্তীতে বেশ কয়েক দফায় তার এই জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়।

পরবর্তিতে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয় বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলিমকে। তিনি গত বছর ৩০ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ।

এফএইচ/একে/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।