খোকার ১০ বছরের কারাদণ্ড
বনানী সুপার মার্কেটের কার পার্কিং ইজারা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকাকে ১০ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার ঢাকার বিভাগীয় স্পেশাল জজ মিজানুর রহমান খান এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে একই মামলায় অপর তিন আসামিকেও ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। সাদেক হোসেন খোকাকে কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২০ লাখ টাকা এবং অপর তিন আসামিকে ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকাসহ মামলার সকল আসামি পলাতক রয়েছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে জরিমানার টাকা আদায়ের জন্য লেভি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
১৯ নভেম্বর (সোমবার) এ মামলার রায় ঘোষণা করার দিন ধার্য থাকলেও রায় প্রস্তুত না হওয়ায় রায় ঘোষণার জন্য আজ (২৮ নভেম্বর) দিন ধার্য করেন আদালত।
মামলার অভিযোগে থেকে জানা যায়, মামলার আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ডিসিসির বনানী সুপার মার্কেট কাম হাউজিং কমপ্লেক্সের বেজমেন্টের কার পার্কিং ইজারার জন্য ২০০৩ সালের দরপত্র আহ্বান করেন। অংশগ্রহণ করা ৪টি দরপত্রের মধ্যে মিজানুর রহমান নামে জনৈক ব্যক্তি বার্ষিক এক লাখ ১০ হাজার টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে সাদেক হোসেন খোকা অপরাপর আসামিদের সঙ্গে পরস্পর যোগসাজশে ইজারার কার্যক্রম স্থগিত করেন। এর মাধ্যমে ফেব্রুয়ারি ২০০৩ সাল হতে ফেব্রুয়ারি ২০১১ সাল পর্যন্ত ৩০ লাখ ৮২ হাজার ৩৯৯ টাকা ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ক্ষতি করেছেন।
এ ঘটনায় ২০১২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শাহবাগ থানায় দুদকের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলাটিতে ২০১২ সালের ৮ নভেম্বর বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকাসহ চার জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল হয়।
মামলার অপর তিন আসামি হলেন- ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ইউনিক কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল বাতেন নকী, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান আজাদ ও গুডলাক কার পার্কিং এর ম্যানেজার এইচ এম তারেক আতিক।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২০ অক্টোবর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের মামলায় সাদেক হোসেন খোকাকে পৃথক ধারায় ১৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালত। একইসঙ্গে ১১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও সাত মাস কারাদণ্ডের আদেশ দেন। রায়ে সাদেক হোসেনের ১০ কোটি ৫ লাখ ২১ হাজার ৮৩২ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে তা রাষ্ট্রের অনুকূলে জমা করার নির্দেশ দেন আদালত।
কিডনি, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিকস রোগের উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০১৪ সালে সাদেক হোসেন খোকা যুক্তরাষ্ট্রে যান। এখনও তিনি যুক্তরাষ্ট্রেই অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
জেএ/আরএস/পিআর