রফিকুল ইসলাম মিয়ার ৬ মাসের জামিন
সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল না করায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় তিন বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাকে ছয় মাসের জামিন দিয়ে জরিমানা স্থগিত করেছেন আদালত। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
রফিকুল ইসলাম মিয়ার পক্ষে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের একক বেঞ্চ আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে এই আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন এজে মোহাম্মদ আলী। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার ফজলুল করিম মন্ডল জুয়েল ও রাগিব রউফ চৌধুরী। অন্যদিকে, দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।
আইনজীবী রাগিব রউফ জানান, আদালত আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে জরিমান স্থগিত করে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন। রোববার (২৫ নভেম্বর) বিএনপির এ আইনজীবীর পক্ষে আপিল দায়ের করেন রাগিব রউফ।
সম্পদের তথ্য বিবরণী দাখিল না করার মামলায় গত ২০ নভেম্বর রফিকুল ইসলাম মিয়াকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. শেখ গোলাম মাহাবুব এ রায় ঘোষণা করেন। কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক।
আদেশে ১৯৫৭ সালের দুর্নীতি দমন আইনের ৪ (২) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছরের কারাদণ্ডসহ পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন আদালত। অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এছাড়া রফিকুল ইসলাম মিয়া আদালতে উপস্থিত না থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করার আদেশ দেওয়া হয়। তিনি স্বেচ্ছায় আদালতে আত্মসমর্পণ কিংবা গ্রেফতারের তারিখ থেকে কারাদণ্ডের মেয়াদ শুরু হবে। রায় ঘোষণার পরপরই আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
ওইদিন মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশান বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে ইস্কাটনের বাসায় ফেরার পর রফিকুল ইসলাম মিয়াকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে ২১ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম মাহমুদা আক্তারের আদালতে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০০১ সালের ৭ এপ্রিল সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সমস্যা ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াকে তার যাবতীয় সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল করার জন্য ৪৫ দিনের সময় দিয়ে একটি নোটিশ দেয় দুদক। ২০০১ সালের ১০ জুন তিনি দুদকের নোটিশটি গ্রহণ করেন। দুদকের নোটিশ ওই বছরের জুনের ১০ তারিখে রফিকুল ইসলাম মিয়া গ্রহণ করলেও কোনো জবাব দেননি।
নোটিশ গ্রহণ করার পরও তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থাৎ ২০০১ সালের ২৫ জুলাই পর্যন্ত কোনো সম্পদের হিসাব দাখিল করেননি। হিসাব বিবরণী দাখিল না করায় ২০০৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুদকের অফিসার লিয়াকত হোসেন বাদী হয়ে রাজধানীর উত্তরা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর রফিকুল ইসলাম মিয়ার বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত শেষ করে ১৯৫৭ সালের দুর্নীতি দমন আইনের ৪ (২) অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। বিভিন্ন সময় ৬ জন এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
এফএইচ/এসএইচএস/পিআর