আল্লাহর ইচ্ছায় বিচার বিভাগ স্বাধীন : আইনমন্ত্রী
বিচারকদের উদ্দেশ্যে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আল্লাহর ইচ্ছা এবং বঙ্গবন্ধুর কন্যার (শেখ হাসিনা) দূরদর্শিতায় আজকে বিচার বিভাগ স্বাধীন।
কিন্তু এই স্বাধীনতা অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ হতো যদি পরের ধাপগুলো সম্পন্ন না হতো। আপনারা যখন স্বাধীন হলেন, তখন আপনাদের বসার তেমন কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এজলাস শেয়ার করে বিচার করতে হতো। জনগণ বিচার পাচ্ছিল না। এটাই ছিল বাস্তব।
বঙ্গবন্ধুর কন্যা এই বাস্তবতা অনুধাবন করে সারাদেশে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করেন। বর্তমানে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। আমি বলবো না যে, আমরা সব করে দিতে পেরেছি।
ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের জন্য আয়োজিত চতুর্থ অরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ সব সময় স্বাধীন ছিল না। যদি বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকতো তাহলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য ২১ বছর অপেক্ষা করতে হতো না। বিচার বিভাগ স্বাধীন হয়েছে ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়।
কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সেটাকে আইনে পরিণত না করলে অধস্তন আদালতের বিচারকরা নির্বাহী বিভাগের অধীনেই থাকতেন।
আনিসুল হক বলেন, বিচারকরা যাতে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল থাকেন, সেজন্য তাদের বেতন প্রায় দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে বিচারকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার মতো শিকড় তৈরি হয়েছে। দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিচারকদের অস্ট্রেলিয়া, ভারত, চীন ও জাপানে নিয়ে গিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
একটি পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য পরিবারের শুধু একজন সদস্য মাদকাসক্ত হওয়াই যথেষ্ট উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, মাদকের ব্যাপারে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। তাই প্রশিক্ষণ শেষে বিচারকদের নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে ফিরে গিয়ে মাদকের ব্যাপারে সমাজের দাবি ও অবস্থার কথা বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
দুর্নীতির বিষয়ে তিনি বলেন, দুর্নীতিও কিন্তু পরিবার বলেন, মূল্যবোধ বলেন, সমাজ বলেন, সবদিক দিয়ে ক্ষতিকর। তাই এর বিরুদ্ধে বিচারকদেরও অবস্থান নিতে হবে।
'সমাজ কিন্তু বিচারকদের কাছ থেকে অনেক কিছু আশা করে। সমাজের অনেক সমস্যা আছে, যেগুলো সমাজকে কুড়ে কুড়ে খেয়ে ফেলছে। পরিবারকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণ আপনাদের কাছ থেকে যে সেবা চান, যা আশা করেন, তা দিতে কার্পণ্য করবেন না',- বলেন আনিসুল হক।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মুসা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকও বক্তৃতা করেন।
এফএইচ/জেডএ/পিআর