জাফরুল্লাহর মাছ চুরির মামলার শুনানিতে দ্বিধাবিভক্ত হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৪৪ পিএম, ২৯ অক্টোবর ২০১৮

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাভারের আশুলিয়ায় মাছ চুরির অভিযোগে করা মামলায় জামিন প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাফি আহমেদ।

জামিন-সংক্রান্ত আবেদনের শুনানিতে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আব্দুল হাফিজ ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীম এর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই বিভক্ত আদেশ দেন। নিয়ম অনুযায়ী এখন আবেদনটি নিষ্পত্তির জন্য অন্য কোনো একক বেঞ্চে পাঠাবেন প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে, তিনি নির্ধারণ করে দেয়ার পর এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোমতাজউদ্দিন ফকির ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাফি আহমেদ।

এর আগে তার বিরুদ্ধে জমি দখল, হত্যার হুমকি ও চাঁদাবাজির মামলাও হয়েছে। এ নিয়ে ডা. জাফরুল্লাহর বিরুদ্ধে সাভারেই পৃথক পাঁচটি মামলা করা হলো।

গত বুধবার (২৪ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড এলাকার বাসিন্দা জনৈক কাজী মহিবুর রব নামে এক ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে মাছ চুরির অভিযোগে আশুলিয়া থানায় মামলাটি করেন। মামলায় ডা. জাফরুল্লাহসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে।

এ মামলায় সোমবার হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। হাইকোর্টে এ আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি শেষে বেঞ্চের সিনিয়র বিচারপতি চার সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করেন। বেঞ্চের জুনিয়র বিচারপতি জামিন আবেদন খারিজ করেন।

আশুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) জাবেদ মাসুদ বলেন, ‘আশুলিয়ার মির্জানগর এলাকায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ১৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ জায়গার ক্রয়সূত্রে নিজেকে মালিক দাবি করেন কাজী মহিবুর রব নামে এক ব্যক্তি। তার দাবি, দীর্ঘদিন থেকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ অবৈধভাবে সেই জমি দখল করতে তাকে প্রাণনাশের হুমকিসহ জমিতে অনধিকার প্রবেশ ও চাঁদা দাবি করে আসছেন। এমনকি জাফরুল্লাহ চৌধুরী লোকজন দিয়ে জমিতে থাকা মাছ চুরি করিয়েছেন বলেও অভিযোগ তার।’

এর আগে গত ১২, ১৫, ১৯ ও ২১ অক্টোবর ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় আরও চারটি মামলা হয়।

১২ অক্টোবর রাতে চাঁদাবাজি, ভাঙচুর, জমি দখল ও সাইনবোর্ড চুরির অভিযোগে ডা. জাফরুল্লাহসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩০ জনকে আসামি করে মামলা করেন আশুলিয়ার ডেণ্ডাবর এলাকার বাসিন্দা হাসান ইমাম।

১৫ অক্টোবর রাতে কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে আশুলিয়া থানায় আরেকটি মামলা করেন মানিকগঞ্জের হরিরামপুর থানার খামারহাটি গ্রামের মোহাম্মদ আলী।

পর পর দুটি চাঁদাবাজির মামলার পর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ১৯ অক্টোবর চুরির অভিযোগে আরও একটি মামলা করা হয়েছে আশুলিয়া থানায়। মামলার বাদী রাজধানীর আদাবরের বাসিন্দা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সৈয়দ সেলিম আহমেদ (৬১)। অনধিকার প্রবেশ, চুরি, ভাঙচুর, ক্ষয়ক্ষতি, হুমকির অভিযোগে মামলাটি করা হয়। এতে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে করা হয়েছে হুকুমের আসামি।

এরপর ২১ অক্টোবর জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগে আরও একটি মামলা করা হয়েছে আশুলিয়া থানায়। মামলার বাদী আশুলিয়ার নলাম গ্রামের নাসির উদ্দিন (৪৯)। মামলায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছাড়াও অজ্ঞাত ৪০ জনকে আসামি করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা দামের মালামাল চুরির অভিযোগ আনা হয়।

এফএইচ/জেএইচ/আরআইপি/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।