এমপি হান্নানসহ ৮ জনের অভিযোগ গঠনের শুনানি ৪ নভেম্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৫০ পিএম, ১৬ অক্টোবর ২০১৮
ফাইল ছবি

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য (এমপি) এমএ হান্নান ও তার ছেলেসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের (ফরমাল চার্জ) বিষয়ে শুনানি আগামী ৪ নভেম্বর ঠিক করেছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে, মামলার এক আসামির পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদারকে নিয়োগ দিয়েছেন আদালত। আদেশের বিষয়টি আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

এ মামলায় এমপি হান্নান ছাড়াও তার ছেলে মো. রফিক সাজ্জাদ (৬২), ডা. খন্দকার গোলাম ছাব্বির আহমাদ (৬৯), মিজানুর রহমান মিন্টু (৬৩), মো. হরমুজ আলী (৭৩), মো. ফখরুজ্জামান (৬১), মো. আব্দুস সাত্তার (৬১) ও খন্দকার গোলাম রব্বানী (৬৩)।

মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপদি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদেস্যর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ আদেশ দেন। আদালতে শুনানি করেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন। অন্যদিকে আসামিপক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার।

প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ জাগো নিউজকে জানান, মামলায় অনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠনের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ শুনানি আগেই শেষ হয়েছিল। আজ নির্ধারিত দিনে আসামিপক্ষের আইনজীবী শুনানি করেন। মামলায় অপর এক আসামি আব্দুস সাত্তার ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ আত্মসমর্পণ করেছিল। ওই আসামির পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হয় আজ।

এর আগে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়া হবে কি না, এ বিষয়ে আদেশের জন্য ১১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।

২০১৬ সালের ১১ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা আসামিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখায় জমা দেয় তদন্ত সংস্থার পক্ষ থেকে। আসামিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা ও লাশ গুম-এ সাত ধরনের অপরাধের ৬টি অভিযোগ আনা হয়েছে।

তদন্ত সংস্থা ওই বছরের ২৮ জুলাই তদন্ত শুরু করে ২০১৬ সালের ১১ জুলাই তা শেষ করেন। ২০১৫ সালের ১০ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করলে ওইদিনই এমপি হান্নানকে গুলশানে তার বাড়ি থেকে এবং ছেলে রফিক সাজ্জাদকে ওই এলাকার একটি অফিস থেকে গ্রেফতার করা হয়।

২০১৫ সালের ১৯ মে ত্রিশালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন এ মামলা করেন। ময়মনসিংহের ১ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক পরে এজাহারটি গ্রহণ করে ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন।

একই অভিযোগে ময়মনসিংহ ৭ (ত্রিশাল) আসনের জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি আনিছুর রহমান (৭০) এবং জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বর্তমান এমপি এম. এ হান্নানসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে লুণ্ঠন ও ধর্ষণ, নির্যাতন, অগ্নি-সংযোগের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের অপর একটি মামলা দায়ের করা হয়।

২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ ৩ নং আমলি আদালতে মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম (৬৮) বাদী হয়ে এ মামলা করেন। পরে ৩ নম্বর আমলি আদালতে বিচারক মিটফুল ইসলাম মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আলহাজ এম এ হান্নান এমপি বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, ১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তৎকালীন শান্তি কমিটির ময়মনসিংহ শহর শাখার আহ্বায়ক এম এ হান্নানের নির্দেশে রাজাকার কমান্ডার আনিসুর রহমান মানিক ও সামসুল হক বাচ্চুসহ পাক হানাদার বাহিনী এবং এর দোসররা ত্রিশালের কালির বাজার ও কানিহারী এলাকায় শতাধিক গণহত্যা, কয়েক কোটি টাকার সম্পদ লুণ্ঠন, ধর্ষণ, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগ করেন।

এফএইচ/এসএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।