খালেদার অনুপস্থিতিতেই কারাগারে বিচার চলবে
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার বিচারিক কার্যক্রম আদালতে চলার আদেশ স্থগিত চেয়ে করা রিভিশন আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেন।
হাইকোর্টের এ আদেশের ফলে বিএনপি চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে কারাগারে এ মামলার বিচার শেষ করতে আর কোনো আইনি বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
তবে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদিন ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন জানিয়েছেন, হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে তারা আপিল করবেন।
আদালতে খালেদার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদিন ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
পরে খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ মো. আখতারুজ্জামান গত ২০ সেপ্টেম্বর এক আদেশে বলেন, খালেদা জিয়া যেহেতু ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’আদালতে হাজির হচ্ছেন না, সেহেতু তার অনুপস্থিতিতেই এ মামলার বিচার কাজ চলবে। ওই আদেশের বিরুদ্ধেই হাইকোর্টে রিভিশন আবেদনটি করেছিলেন খালেদা জিয়া। গত ১০ অক্টোবর আবেদনটির ওপর শুনানি হয়। আদালত আজ (রোববার আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দেওয়ায় খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই বিচার চলবে।
গত ১০ অক্টোবর এ আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশের জন্য ১৪ অক্টোবর (রোববার) দিন নির্ধারণ করেন আদালত।
এর আগে খালেদা জিয়ার বিচারের জন্য কারা অভ্যন্তরে যে আদালত স্থাপন করা হয়েছে তা অবৈধ দাবি করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচার কাজ স্থগিত চেয়ে রিভিশন আবেদন জানায় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। একইসঙ্গে, আবেদনটিতে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে কারা অভ্যন্তরে স্থাপিত আদালতে তার বিচার চলবে বলে আদালত যে আদেশ দিয়েছেন তা বাতিল চাওয়া হয়।
এদিকে গত ২১ সেপ্টেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ আদালতে না আসায় তার অনুপস্থিতিতেই বিচার চলবে বলে আদেশ দেন আদালত। পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান এ আদেশ দেন।
আদালত আদেশে বলেন, গত বছরের ২১ ডিসেম্বর থেকে যুক্তিতর্কের জন্য দিন ধার্য হচ্ছে। অদ্যবধি এক বছর ৯ মাস পার হয়েছে। কিন্তু আসামিপক্ষ নানা অজুহাতে তা শেষ করেনি।
আদেশে আরও বলা হয়, গত ৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া আদালতে উপস্থিত হন। কিন্তু সেদিন তার আইনজীবীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। খালেদা জিয়ার ওকালতনামা অনুসারে ১২৬ জন আইনজীবী রয়েছেন। সাত বছর ধরে এ মামলা চলছে। এ পর্যন্ত মোট ৪২ বার সময় নেয়া হয়েছে। আর আত্মপক্ষ সমর্থনের (৩৪২ ধারা পরীক্ষা) সময়ই ৩২ বার সময় নেয়া হয়।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এফএইচ/এনডিএস/এমএস