‘গায়েবি মামলা’ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হাইকোর্ট 

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:১৬ পিএম, ০৯ অক্টোবর ২০১৮

বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা ‘গায়েবি চার হাজার মামলা’ নিয়ে রিটের ওপর দ্বিধাবিভক্ত আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। দ্বিধাবিভক্ত আদেশ হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী বিষয়টি এখন তৃতীয় একটি বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেবেন প্রধান বিচারপতি।

গায়েবি মামলাগুলোর তদন্তের জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত করার জন্য আদেশ দিয়েছেন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। একই সঙ্গে, মামলাগুলো কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন তিনি।

সেপ্টেম্বর মাসে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুসারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অগণিত মানুষের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা করা কেন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি । এ ছাড়া, এসব মামলা তদন্তে কেন কমিশন গঠনের নির্দেশ দেয়া হবে না, এ মর্মেও রুল জারি করেন তিনি।

তবে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি রুল জারি করে আদেশ দিলেও দ্বিমত পোষণ করে আদেশ দেন বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি। সেই সঙ্গে রিটটি খারিজ করে দেন তিনি। রিট খরিজ করার মতামতে কনিষ্ঠ বিচারপতি বলেন, সংবিধানের ১০২ অনুযায়ী, ফৌজদারি মামলায় যিনি আসামি তিনি জনস্বার্থে রিট করতে পারেন না বলে আপিল বিভাগের দেয়া রায়ের সিদ্ধান্ত রয়েছে। তাই সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত হাইকোর্ট মানতে বাধ্য। তাই রিটটি খারিজ করা হয়েছে।

পরপর দুদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারল মমতাজ উদ্দিন ফকির, মুরাদ রেজা ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল।

সেপ্টেম্বরে সারাদেশে বিএনপির জ্যেষ্ঠ আইনজীবীসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা চার হাজার মামলায় তিন লাখেরও বেশি লোককে আসামি করার কারণ জানতে চেয়ে করা রিটের শুনানিতে এমন দ্বিধাবিভক্ত আদেশ দেন হাইকোর্ট।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বাদী হয়ে এই রিট করেন।

রিটে এসব মামলা নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের প্রতিনিধি রাখার নির্দেশনা চাওয়া হয়। এ ছাড়া এসব মামলার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে রুল জারিরও আর্জি জানানো হয়।

রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহা-পরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (নর্থ জোন), রমনা জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার, রমনা ও শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ ৯ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

এফএইচ/এসএইচএস/জেডএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।