নাজমুন আরার পর আপিল বিভাগে জিনাত আরা

মুহাম্মদ ফজলুল হক
মুহাম্মদ ফজলুল হক মুহাম্মদ ফজলুল হক , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:১৬ পিএম, ০৯ অক্টোবর ২০১৮

দীর্ঘদিন চার সদস্য নিয়ে বিচার কার্যক্রম চালিয়ে আসার পর নতুন তিনজন বিচারক পেল দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা বিচারপতি জিনাত আরা, বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী এবং বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান এখন থেকে আপিল বিভাগে বিচারিক দায়িত্ব পালন করবেন।

তাদের তিনজনকে সোমবার আপিল বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন তাদের শপথ বাক্য পাঠ করান। নতুন তিনজনকে নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারকের সংখ্যা হলো সাতজন।

বিজ্ঞাপন

হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠতার ক্রমে চতুর্থ অবস্থানে থাকা বিচারপতি জিনাত আরা হলেন দ্বিতীয় নারী যিনি দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগের বিচারিক দায়িত্ব পেলেন।

তার আগে বাংলাদেশের প্রথম নারী বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের জুলাই পর্যন্ত আপিল বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন। ওই বছরের ৭ জুলাই অবসরে যান বিচারপতি নাজমুন আরা।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

শপথ গ্রহণের পর আপিল বিভাগের এক নম্বর এজলাস কক্ষে নবনিযুক্ত তিন বিচারপতিকে সংবর্ধনা দেয় বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ছিল না।

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতি এজলাসে বসেন। পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম একে একে নবনিযুক্ত তিন বিচারপতির সংক্ষিপ্ত জীবনবৃত্তান্ত তুলে ধরেন। এ ছাড়াও বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন তিন বিচাপতিকে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য দেন।

এ সময় বিচারপতি জিনাত আরা বলেন, আইনের শাসন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও বিচারপ্রার্থীদের বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। মামলা জট নিরসনের ক্ষেত্রে সফল না হলে বা মামলা জট বাড়তে থাকলে বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা হারিয়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

১৯৫৩ সালের ১৫ মার্চ জন্মগ্রহণ করা বিচারপতি জিনাত আরা অবসরের বয়সসীমা অনুযায়ী আরও দুই বছর সর্বোচ্চ আদালতের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।

জিনাত আরা এইচএমআর সিদ্দিকী ও বেগম আয়েশা সিদ্দিকীর মেয়ে। তিনি ১৯৫৩ সালের ১৫ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল অব হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করেন এ বিচারপতি।

১৯৭৮ সালের ৩ নভেম্বর বিচার বিভাগে মুন্সেফ হিসেবে চাকরি শুরু করেন। এরপর ১৯৯৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে তিনি পদোন্নতি পান। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৩ সালের ২৭ এপ্রিল তিনি হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক নিযুক্ত হন। ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল তিনি হাইকোর্টের বিচারক পদে নিয়োগ পান। এরপর ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।

বিজ্ঞাপন

তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন স্কুল ও ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সার্টিফিকেট কোর্স করেন। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক সেমিনার ও ট্রেনিংয়ের জন্য বেইজিং, সাংহাই, আমেরিকা, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, ভারত, পাকিস্তান, পানামা, ফিলিপাইন, তাইওয়ান, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড সফর করেন।

রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে তিনি বেলজিয়াম, ইরাক, কুয়েত, মালয়েশিয়া, নেদারল্যান্ডস, জর্দান, সিরিয়া, সিঙ্গাপুর ও ইংল্যান্ড সফর করেন।

আপিল বিভাগে সর্বশেষ ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনজন বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়। পৌনে তিন বছর পর আবারও তিনজন বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হলো।

বিজ্ঞাপন

দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা পদত্যাগ করার পর গত বছরের শেষ দিকে সেই দায়িত্বভার পান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা। তখন আপিল বিভাগের সদস্য সংখ্যা ছিল পাঁচজন। পরে বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলে গত ২ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করেন বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞা। ফলে আপিল বিভাগে বিচারকের সংখ্যা নেমে আসে চারজনে।

বিচারপতি ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দারকে সঙ্গে নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ওই সময় থেকে আপিল বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন।

 

বিজ্ঞাপন

এফএইচ/এনডিএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।