‘গায়েবি মামলায় মানুষ আতঙ্কিত’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৪৯ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

‘শুধু সেপ্টেম্বর মাসে প্রায় ৩ লাখ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রায় ৪ হাজার মামলা করা হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে সারা দেশে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের বিরুদ্ধে এসব মামলা করা হয়েছে। এসব গায়েবি মামলায় সারাদেশের মানুষ আতঙ্কিত।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন।

তিনি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশে ঢালাওভাবে এ ধরনের গায়েবি মামলা করার উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকারবিরোধী দলকে চাপে রেখে বিরোধী নেতাকর্মীদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করা। আগামী নির্বাচনে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী দল যাতে মাঠে থাকতে না পারে সেজন্য এসব মামলা করা হয়েছে।

রোববার এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদন করার পর সুপ্রিম কোর্টে তার নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

এ সময় খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, এ ধরনের মামলা সঠিক হয়েছে কি না তা তদন্ত করতে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিশন গঠন করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের কাল্পনিক মামলা করে যেন হয়রানি না করা হয় তার নির্দেশনা জারির আবেদন করা হয়েছে। যারা এ ধরনের মামলা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়েও আবেদন করা হয়েছে।

‘উচ্চপর্যায়ের কমিশন করে দেখা হোক। যে অভিযোগে মামলা করা হয়েছে সত্যিকার অর্থে এমন ঘটনা ঘটেছে কি না কমিশন কর্তৃক তদন্ত করে দেখা হোক’,- বলেন তিনি।

বিএনপির এই আইনজীবী বলেন, সারা দেশের মানুষকে আসামি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসব মামলায় গ্রেফতার বাণিজ্য করছে। এ জন্য আমি ও আইনজীবী নিতাই রায় চৌধুরী, সানাউল্লাহ মিয়া রিট আবেদর করেছি। এসব মামলা মিথ্যা ও কাল্পনিক কি না তা তদন্তে কমিশন গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। পুলিশের যারা এ ধরনের এফআইআর করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। এই মামলা থেকে মানুষ নিষ্কৃতি চায়।

তিনি জানান, দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত যত গায়েবি মামলা দেয়া হয়েছে সেগুলোর প্রত্যাহার এবং এ গায়েবি মামলাগুলোর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক উচ্চপর্যায়ের কমিটি করে ঘটনার তদন্ত করা। সেইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে যেন এ ধরনের মামলা দেয়া না হয়, তার নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে।

পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ব্যতীত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অগণিত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশি ক্ষমতা অপব্যবহার করে গায়েবি বা আজগুবি মামলা করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, রিটে সে বিষয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, পুলিশের আইজি, ডিএমপি কমিশনার, ডিএমপি রমনা জোনের ডেপুটি ও অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার, রমনা, পল্টন ও শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ মোট নয়জনকে এই রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় আবেদনকারীসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে এ ধরনের মামলা দায়ের থেকে বিরত থাকতে এবং এ ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি (যার মধ্যে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের প্রতিনিধি রাখা) গঠনের নির্দেশনা জারির আবেদন করা হয়েছে।

এ ছাড়া রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে করা এসব মামলার তদন্ত থেকে বিরত থাকে নির্দেশনা জারির আর্জি জানানো হয়েছে আবেদনে।

এফএইচ/জেডএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।