প্রধান বিচারপতিকে যা বললেন খালেদার আইনজীবীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:২৮ পিএম, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবন কক্ষে অস্থায়ী আদালত বসানো এবং খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার সার্বিক বিষয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে নালিশ করেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

রোববার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের নেতৃত্বে প্রধান বিচারপতির খাস কামরায় দেখা করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। সেখানে প্রায় আধা ঘণ্টা বৈঠক করেন তারা।

এর আগে দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে প্রধান বিচারপতির খাস কামরায় যান খালেদার আইনজীবীরা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, খন্দকার মাহবুব হোসেন, এজে মোহাম্মদ আলী, মীর মোহাম্মদ নাসির, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, নিতাই রায় চৌধুরী, বদরোদ্দোজা বাদল প্রমুখ।

বৈঠক শেষে জয়নুল আবেদীন বলেন, হঠাৎ করে রাতের বেলা নিয়ম ও আইন বহির্ভূতভাবে জেল খানার একটি কক্ষকে অস্থায়ী আদালত স্থাপন করা হয়েছে। যাতে আইন অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে নেয়ার বিধান থাকলেও সেটি করা হয়নি। বিষয়টি আমরা প্রধান বিচারপতিকে জানিয়েছি। তিনি ধৈর্যের সঙ্গে বিষয়টি শুনেছেন এবং বিষয়টি দেখবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, গত তারিখে আপনারা দেখেছেন অসুস্থ অবস্থায় জোর করে খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। বলতে গেলে বেগম খালেদা জিয়া বসতে পারে না, দাঁড়াতে পারে না, হাঁটতে পারে না। এ অবস্থায় তাকে হাজির করা হয়েছে। আইনজীবীদের কোনো জুডিশিয়াল নোটিশ পর্যন্ত করা হয়নি।

সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি বলেন, কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা আগে একটা জুডিশিয়াল আদেশ দিয়ে আইনজীবীদের একটা নোটিশ করতে হয়। সেই নোটিশ পর্যন্ত করে নাই। যেহেতু এটা ওপেন ট্রায়ালও না। সেই কারণে আমরা সেখানে উপস্থিত হতে পারি নাই। সেই কারণে এই আদালত আবার ১২ সেপ্টেম্বর তারিখ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা মনে করেছি, সংবিধানের অভিভাবক হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট। আর সুপ্রিম কোর্টের অভিভাবক হচ্ছেন প্রধান বিচারপতি। সুতরাং এই ধরনের গেজেট নোটিফিকেশন ১৯ (বি) চ্যাপ্টার ১ সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশ হাইকোর্ট রুলস ১৯৭৩ অনুসারে এইটা সুপ্রিম কোর্টের পাওয়ার। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আলোচনা না করে এই ধরনের কোর্ট স্থাপন করে প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে না। এই কথাগুলো আমরা বলেছি।

আমরা বিশ্বাস করি প্রধান বিচারপতি আমাদের বিষয়টি যেভাবে শুনেছেন তিনিও চান বিচার বিভাগের সুপ্রিমিসি থাকবে এবং প্রধান বিচারপতি আমাদের এটা গ্রহণ করেছেন। আমরা আশাবাদী। তিনি বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

প্রধান বিচারপতি বলেছেন, আমি এটা দেখব। তিনি বলেছেন, আমার ক্ষমতাবলে, মাসদার হোসেন মামলার আলোকে এবং ১৯ বি অনুযায়ী আমার যেটুকু ক্ষমতা আছে সে অনুযায়ী আমি বিষয়টি বিবেচনা করব।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার কারাগারে বিশেষ আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিচার নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বকশিবাজার এলাকার সরকারি আলিয়া মাদরাসার ও সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠে নির্মিত এলাকাটি জনাকীর্ণ থাকে। সে জন্য নিরাপত্তাজনিত কারণে বিশেষ জজ আদালত-৫ নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার এর প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষকে আদালত হিসেবে ঘোষণা করা হলো।

বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন বিশেষ মামলা নং ১৮/২০১৭ এর বিচার কার্যক্রম পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের কক্ষ নং ৭ এর অস্থায়ী আদালতে অনুষ্ঠিত হইবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ পাঁচ আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং প্রত্যেকের দুই কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করে রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায় ঘোষণার পর পরই খালেদা জিয়াকে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।

এফএইচ/জেএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।