নিয়ম অনুযায়ী পাসপোর্ট করেছিলেন তারেক
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান একাধিক পাসপোর্ট ব্যবহার করেননি বরং নিয়ম অনুযায়ী পাতা শেষ হওয়ার পর তার পাসপোর্ট করার অনুমতি দেয়া হয় বলে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন দাখিল করা হয় হাইকোর্টে। একইসঙ্গে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী তারেকের পাসপোর্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে তা আবারো নবায়ন করা হয়েছিলো বলে আদালতে অপর একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত ২৩ জুন হাইকোর্ট এক আদেশ জারি করেন যে, তারেক রহমান একাধিক পাসপোট ব্যবহার করছেন কিনা? এবং কার নির্দেশে তারেক রহমানের পাসপোর্ট নবায়ন করা হয়?
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের পক্ষ থেকে গত ৫ আগস্ট অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে দুটি প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়, তারেক রহমান একাধিক পাসপোর্ট ধারণ করেননি। বরং তারেক রহমানের পাসপোট হারানোর পর তিনি নতুন পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন।
অপরদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তারেক রহমানের পাসপোর্ট বিভিন্ন সময়ে নবায়ন করা হয়েছে।
গত ৭ জানুয়ারি এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আইনের দৃষ্টিতে পলাতক থাকায় তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তারেক রহমান বর্তমানে কোথায় অবস্থান করছেন সে বিষয়ে জানতে চান হাইকোর্ট।
এ আদেশের বিষয়ে প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের পর চলতি বছরের ২৩ জুন হাইকোর্ট তারেক রহমানের একাধিক পাসপোর্ট এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে পাসপোর্ট নবায়নের বিষয়ে জানাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পুলিশকে নির্দেশ দেন।
আদালতের এ আদেশ অনুসারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পুলিশের পক্ষ থেকে গত ৫ আগস্ট বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে প্রতিবেদন দাখিল করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
রোববার আদালত প্রতিবেদনগুলো রেকর্ডে নিয়ে রুল শুনানি প্রস্তুত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। জানতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী দুটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ওইসব প্রতিবেদনে আইনপরিপন্থী কোনো কাজ করা হয়নি। বরং তার পাসপোর্ট হারিয়ে যা্ওয়ায় তিনি নতুন পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন।’ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
১/১১ এর তত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে জামিনে মুক্তি নিয়ে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান তারেক রহমান। তখন থেকে তিনি লন্ডনে অবস্থান করছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর তার (তারেক) পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। যার মেয়াদ ছিলো ২০১০ সালের ৩ জুন পর্যন্ত।পরে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিবের অনুরোধে আবারো তারেকের পাসপোর্টের মেয়াদ ২০১৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মেয়াদ বাড়ানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়- তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত/ডেপুটি হাইকমিশনার (লন্ডন) আল্লামা সিদ্দিকী বলেন, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিব মো. আব্দুল করিম আমাকে তারেক রহমানের পাসপোর্ট নবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেন। এ বিষয়ে আমি হাইকমিশনের তৎকালীন মিনিস্টার (কনসুালার বিষয়ক) এনামুর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনা করে স্বরাষ্ট্র সচিবের নির্দেশনা তাকে অবহিত করি।
অপরদিকে তারেক রহমান একই মেয়াদে একাধিক পাসপোর্ট ধারণ করেননি। পাসপোর্টের বৈধ মেয়াদের মধ্যে পাসপোর্টের পাতা শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে তার অনুকূলে নতুন পাসপোর্ট প্রদান করা হয়েছে বলে পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এফএইচ/এসএইচএস/এমআরআই