জনকণ্ঠকে ২৯ জুলাইয়ের পরের সব লেখা জমা দেয়ার নির্দেশ
সালউদ্দিন কাদের চৌধুরী রায়ের পর জনকণ্ঠ নিয়ে রুল জারির পর থেকে দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত সকল লেখা আদালতে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। রোববার প্রধান বিচরপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
একই সঙ্গে পত্রিকাটির সম্পাদক আতিকুল্লাহ খান মাসুদ ও নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়ের আদালত অবমাননার জবাব দাখিলের শুনানি আপিল বিভাগের বৃহত্তর বেঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের আট সদেস্যের বিচারপতির বেঞ্চ শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
জানতে চাইলে জনকণ্ঠের আইনজীবী সালাহউদ্দিন দোলন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা তিনটি আবেদন করেছিলাম আপিল বিভাগে। একটি হলো কন্টেম মামলার বিষয়বস্তুর সঙ্গে প্রধান বিচারপতির কথাবার্তা আছে। তাই আমরা ওনাকে বাদ দিয়ে বেঞ্চ গঠনের জন্য। সেটি খারিজ করেছেন তিনি। তার পর দ্বিতীয়টি হলো আমরা জবাব দেব। জবাবগুলো প্লেজ করছিলাম তার শুনানির জন্য রোববার দিন ঠিক করেছেন। তৃতীয় আবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করিনি তাই তা প্রকাশ করবো না।
অপর দিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, দৈনিক জনকণ্ঠের সম্পাদক ও নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়ের বিষয়ে যে রুল ছিল তা প্রধান বিচারপতি রোববার বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানির জন্য ঠিক করেছেন। আমি মনে করি জনকণ্ঠ এই লেখার মাধ্যমে আদালত অবমাননা তো করেছেই এখন তারা যে সমস্ত ডকুমেন্ট জমা দিচ্ছে সেটা আরো গুরুতর পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হয় এমন কোনো কাজ সাংবাদিকদের করা উচিত না।
গত সোমবার জনকণ্ঠের সম্পাদক ও নির্বাহী সম্পাদক হাজির হয়ে জবাবের জন্য প্রথমে তিন মাস এবং পরে দুই সপ্তাহ সময় চাইলে তা নামঞ্জুর করে এ আদেশ দেন আদালত। তার আগে একই আদালত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর আপিলের রায়কে কেন্দ্র করে উপসম্পাদকীয় লেখা ও প্রকাশের বিষয়ে রোববারের মধ্যে দৈনিক জনকণ্ঠের সম্পাদক আতিকুল্লাহ খান মাসুদ ও নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়কে জবাব দাখিলে নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।
জনকণ্ঠের সম্পাদক ও নির্বাহী সম্পাদকের পক্ষে আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন সাংবাদিকদের কাছে আদালতের এ নির্দেশনার কথা জানান। তিনি বলেন, রোববারের মধ্যেই জবাব দাখিল করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে জনকণ্ঠের সম্পাদক ও নির্বাহী সম্পাদককেও ওই দিন হাজির থাকতে হবে।
গত ২৯ জুলাই দৈনিক জনকণ্ঠের সম্পাদক আতিকুল্লাহ খান মাসুদ ও নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়কে তলব করে স্বপ্রণোদিত আদেশ দেন আপিল বিভাগ। আদালত অবমাননার দায়ে কেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না- তাদেরকে হাজির হয়ে এর ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। সে অনুযায়ী তারা ওই দিন হাজির হয়ে জবাব দাখিলে সময় প্রার্থনা করেন।
গত ১৬ জুলাই দৈনিক জনকণ্ঠে ‘সাকার পরিবারের তৎপরতা/পালাবার পথ কমে গেছে’ শিরোনামে উপসম্পাদকীয় লেখেন স্বদেশ রায়। সে লেখায় সাকা চৌধুরীর আপিল মামলার রায়কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন কথা উল্লেখ করা হয়।
২৯ জুলাই সাকা চৌধুরীর আপিলেও মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার রায়ের পরপরই জনকণ্ঠের সম্পাদক ও নির্বাহী সম্পাদককে তলব করে আদেশ দেন আদালত।
এফএইচ/বিএ/আরআইপি