শহীদুল আলমকে নিয়ে উচ্চ আদালতে দুই শুনানি আজ
আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের নির্যাতনের বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসকদের দেয়া প্রতিবেদন নিয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে শুনানি হবে আজ। বৃহস্পতিবার বিচারপতি সৈয়দ মো. দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি ইকবাল কবীরের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানির জন্য নির্ধারিত রয়েছে।
এর আগে গত (৭ আগস্ট) আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পাঠানোর আদেশ দেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
এ ছাড়াও হাইকোর্টের দেয়া আদেশের বিষয়ে আজ আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে দুপুর ২টায় শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে হাইকোর্টের দেয়া মঙ্গলবারের আদেশ স্থগিত চেয়ে বুধবার আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর চেম্বারজজ আদালত আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন।
বুধবার আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মমতাজ উদ্দিন ফকির, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ ও অমিত তালুকদার। রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইদ্রিসুর রহমান, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, তানিম হোসেইন ও আইনুন নাহার অ্যানি।
আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করেছিল। চেম্বার বিচারপতি স্থগিতাদেশ না দিয়ে আবেদনটি বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে এ বিষয়ে শুনানি হবে। আবার একই বিষয়ে হাইকোর্টেও শুনানির জন্য রয়েছে।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের করা আন্দোলনের মধ্যে ‘উস্কানিমূলক মিথ্যা’ বক্তব্য প্রচারের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে করা এ মামলায় আলোকচিত্রী শহিদুল আলম ডিবি হেফাজতে সাতদিনের রিমান্ডে আছেন।
শহিদুল আলমকে আটকের পর নির্যাতন ও রিমান্ডে পাঠানোর বৈধতা নিয়ে এবং চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশনা চেয়ে স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ মঙ্গলবার রিট করেন। এতে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ডিআইজি (ডিবি) ও রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বিবাদী করা হয়।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গত শনি ও রোববার (৪ ও ৫ আগস্ট) জিগাতলা এলাকায় সংঘর্ষের বিষয়ে কথা বলতে বেশ কয়েকবার ফেসবুক লাইভে আসেন শহিদুল আলম। রোববার রাতে ধানমন্ডির বাসা থেকে তাকে ডিবি পরিচয়ে তুলে আনা হয়। নিরাপদ সড়কের দাবিতে সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন তিনি।
পুলিশের রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আসামি শহিদুল আলম তার ফেসবুক টাইমলাইনের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে কল্পনাপ্রসূত অপপ্রচার চালান। এর মাধ্যমে জনসাধারণের বিভিন্ন শ্রেণিকে শ্রুতিনির্ভর (যাচাই-বাছাই ছাড়া কেবল শোনা কথা) মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে উস্কানি দিয়েছেন, যা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ ও অকার্যকর রূপে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উপস্থাপন করেন।
এফএইচ/এমএমজেড/আরআইপি