রাস্তায় না চলুক বাস, তবুও জিম্মি থাকতে পারি না : এরশাদ
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, পরিবহন শ্রমিকদের কাছে দেশ জিম্মি। রাস্তায় না চলুক বাস, ওদের কাছে জিম্মি থাকতে পারি না। জালা যন্ত্রণা আর সহ্য করতে পারছি না। কয়টা মানুষের কাছে দেশ জিম্মি থাকতে পারে না।
শনিবার সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশন কেন্দ্রীয় সম্মেলনে এরশাদ এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, আমি বাসচাপায় নিহত শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিমের বাসায় গিয়েছিলাম। তখন দেখেছি আট সদস্যের একটি পরিবার কোথায় বাস করে। একটি বদ্ধ ঘরে টয়লেট, জানালা কিছুই নেই। সারা রাত আমার ঘুম হয়নি।
এরশাদ বলেন, দিয়ার বাসা থেকে ফেরার পর সেই রাতে আমার ঘুম হয়নি। ওই রাতে এসি বন্ধ করে দিয়ে জেগে জেগে চিন্তা করেছি, সেখানে তারা কিভাবে থাকে। রাজধানীর ফুটপাতে কত মানুষ ঘুমায় দেখার কেউ নেই। দেশে কাজ নেই, ধান কাটা শেষ তো কাজও শেষ। গ্রামে ধান কাটা শেষে হলে ঢাকায় ছুটে আসে মানুষ কাজের সন্ধানে। দেশের মিল ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ কর্মক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে না।
তিনি বলেন, দেশে কোন কর্মক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে না। সাড়ে চার কোটি বেকার, ৪০ টাকার ওপরে চালের কেজি। গ্রাম-গঞ্জে মানুষ অভাব অনটনে রয়েছে দেখার কেউ নেই।
সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, সবচেয়ে দুঃখের বিষয়, এই কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা কোনো রাজনৈতিক দলের সংগঠনের না। তাদের কাছে রাজনীতিতে তাদের কিছু চাওয়ার নাই। তারা চায় নিরাপদ সড়ক, বড় কিছু না, তারা বাঁচতে চায়। কিন্তু যেভাবে ছাত্রলীগের ছেলেরা তাদের আক্রমণ করল, দেখে দুঃখ লাগল।
তিনি বলেন, আজও সাতজন মারা গেছে। প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিল। দেখতে ইচ্ছা করে না, শুনতে ইচ্ছা করে না, পড়তে ইচ্ছা করে না। আমরা মরার জন্য জন্মগ্রহণ করেছি এই দেশে? এত আত্মত্যাগ করে দেশকে স্বাধীন করেছে রাস্তাঘাটে মরার জন্য?
এরশাদ বলেন, এদিন মানুষ আর দেখতে চায় না। মানুষ সুদিন দেখতে চায়। আইনের শাসন দেখতে চায়। আজ কতগুলো বাসের মালিক দশকে অচল করে দিয়েছে। সরকার চুপ করে আছে। এর কোনো বিবাহিত নাই, এর কোনো বিহিদ হতে পারে না? বাসের মালিক আমাদের সরকারকে অচল করে দিয়েছে। হতে পারে কখনও?
জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশন ও প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট শেখ সিরাজুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন সাবেক মন্ত্রী ও কো চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিরি সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার, জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, সাবেক মন্ত্রী ও মহাসচিব কাজী ফিরোজ রশিদ, সাবেক মন্ত্রী ও মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, শ্রম কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ও প্রিসিডিয়াম সদস্য মজিবুল হক চুন্নু প্রমুখ।
গত রোববার রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালের সামনে জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসের পাল্লায় নিহত হন আবদুল করিম রাজীব ও দিয়া খানম মিম নামের দুই শিক্ষার্থী। একে হত্যা আখ্যা দিয়ে বিচারসহ ৯ দফা দাবিতে রাজপথে নামে শিক্ষার্থীরা।
এফএইচ/জেএইচ/জেআইএম