হাসপাতালের বারান্দায় প্রসবের পর মৃত্যু : প্রতিবেদন চায় হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:১৬ পিএম, ২৫ জুলাই ২০১৮

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রোগীকে তাড়িয়ে দেয়ার পর বারান্দায় বাচ্চা প্রসব এবং নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

১ আগস্ট স্বাস্থ্য সচিবকে ওই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও ওইদিন (১ আগস্ট) অভিযুক্ত ডাক্তার আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সিনিয়র নার্স ছায়া চৌধুরীকে আদালতে সশরীরে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

জনস্বার্থে দায়ের করা রিটের শুনানি নিয়ে বুধবার (২৫ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান ও নার্স ছায়া চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. আমিরুল হক।

আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, পুঁটিবিলা গৌড়স্থান এলাকার দিনমজুর মহররম মিয়ার স্ত্রী মরিয়ম বেগম গত ৯ মে প্রসব ব্যাথা নিয়ে লোহাগাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। কিন্তু দায়িত্বরত চিকিৎসক আবদুল্লাহ আল মামুন ও নার্স ছায়া চৌধুরী চিকিৎসা না দিয়ে মরিয়ম বেগমকে বের করে দেন। পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাইরের বারান্দায় সন্তান প্রসবের কিছুক্ষণের মধ্যেই নবজাতকের মৃত্যু হয়। এরপর ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়।

প্রকাশিত ওইসব প্রতিবেদন যুক্ত করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে রিট করেন আইনজীবী মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী।

মনজিল মোরসেদ আরও জানান, ওই ঘটনা তদন্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন প্রতিনিধি, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন, লোহাগাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের একজন অধ্যাপককে নিয়ে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি তদন্তকালে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও নার্সের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। কিন্তু ২৫ জুলাই প্রতিবেদন আদালতে না এলে পুনরায় প্রতিবেদন দাখিলে সময় দেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১১ জুন আদালত ওই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করে ঘটনার ব্যাখ্যা জানতে চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সিনিয়র নার্স ছায়া চৌধুরীকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। এ প্রেক্ষিতে তারা হাজির হয়ে গত ৮ জুলাই আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে ব্যাখ্যা দাখিল করেন।

এ ছাড়াও ভুক্তভোগী মরিয়ম বেগমকে চিকিৎসা দিতে হাসপাতালের ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি নবজাতকের জীবন রক্ষায় হাসপাতালের ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং সংশ্লিষ্ট ডাক্তার ও নার্সদেরকে মৃত নবজাতকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়।

চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারি এবং সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট মোট ৯ জনকে এ রুলের জবাব দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

এফএইচ/এএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।