এবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানের জামিন শুনানিতে বৃহত্তর বেঞ্চ
বিচার শুরুর আগে বিশেষ আইনের কোনো মামলায় বিচার বিভাগীয় হাকিমের (জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) আদালত আসামিকে জামিন দিতে পারে কিনা-এ প্রশ্ন নিষ্পত্তির জন্য তিন সদস্যের হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
বুধবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদেস্যর বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দেন। তার সঙ্গে থাকবেন সদস্য বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আশরাফুল কামাল। এ বিষয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার শুনানি অনুষ্ঠিত হতে পারে বলেও জানান দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
এর আগে গত ৫ এপ্রিল বিশেষ আইনের কোনো মামলায় বিচার শুরুর আগে বিচার বিভাগীয় হাকিমের (জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) আদালত কোনো আসামিকে জামিন দিতে পারে কিনা-এ প্রশ্ন নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে সুপারিশ করেছেন হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ। একই সঙ্গে, সংশ্লিষ্ট মামলার নথি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হয়েছে।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই সুপারিশ করেন। আরব-বাংলাদেশ (এবি) ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক ও কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামালকে দেয়া জামিন বহাল রাখা হবে কিনা সে প্রশ্নে বিচারাধীন রুলের ওপর শুনানিকালে আদালত এই আদেশ দেন।
আদেশের আগে আদালত বলেন, ‘এ ধরনের বিশেষ আইনের মামলায় জামিন দেয়ার ক্ষেত্রে হাইকোর্টের একাধিক পৃথক সিদ্ধান্ত রয়েছে। তবে, আপিল বিভাগের কোনো সিদ্ধান্ত আমরা পাইনি। কিন্তু, কলকাতা হাইকোর্টের একটি নজির আমরা পেয়েছি। সেখানে বলা হয়েছে, ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট জামিন দিতে পারেন না।’
আদালত আরও বলেন, ‘আগে এত বিশেষ আইন ছিল না। এখন অনেক বিশেষ আইন হয়েছে। এ কারণে বিচার শুরুর আগে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জামিন দেওয়ার এখতিয়ার রয়েছে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়া প্রয়োজন।এ কারণে বিষয়টি বৃহত্তর বেঞ্চে নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন।’
তবে, এম ওয়াহিদুল হক ও আবু হেনা মোস্তফা কামালের জামিন প্রশ্নে আদালত বলেন, ‘আগে আইনি বিষয় নিষ্পত্তি হোক। এরপর জামিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’
আদালতের এ আদেশের পর আইনজীবীরা বলেছেন, এর ফলে এবি ব্যাংকের ওই দুই কর্মকর্তার জামিন আপাতত বহাল রইল।
এ দুজনের জামিন কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে গত ৩১ জানুয়ারি রুল জারি করেছিলেন একই বেঞ্চ। পাশাপাশি নিম্ন আদালতে থাকা মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠাতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতকে নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর গত ২১ মার্চ একই আদালত ওই দুইজনের জামিন প্রশ্নে আদেশের জন্য ৪ এপ্রিল দিন ধার্য করেন। এ অবস্থায় গতকাল নির্ধারিত দিনে আদালত বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের জন্য মামলার নথি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠান।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান এবং এবি ব্যাংকের ওই দুই কর্মকর্তার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আর্শাদুর রউফ ও শেখ বাহারুল ইসলাম।
ওয়াহিদুল হকসহ আটজনের বিরুদ্ধে গত ২৫ জানুয়ারি দুদক মতিঝিল থানায় মামলা করে। এ মামলার পর ওই দিনই ওয়াহিদুল হক, আবু হেনা মোস্তফা কামাল ও সাইফুল হককে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাদের মহানগর হাকিম আদালতে নেওয়া হলে আদালত ওয়াহিদুল হক ও মোস্তফা কামালের জামিন মঞ্জুর করেন। আর সাইফুল হককে পুলিশের কাছে তিন দিনের রিমান্ডে দেয়া হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন।
এফএইচ/এসআর/পিআর