মাহমুদুর রহমানের বিষয়টি আমি দেখব : প্রধান বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১০ পিএম, ২৪ জুলাই ২০১৮
ছবি-ফাইল

আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর কুষ্টিয়ায় আদালত অঙ্গনের হামলার ঘটনাটি দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক বিষয়টি আপিল বিভাগের নজরে আনলে প্রধান বিচারপতি তাদের এই আশ্বাস দেন। এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা বিষয়টি দেখব।

পত্রিকায় প্রকাশিত বিষয়টি আদালতের নজরে এনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন ও সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। পরে আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে এ বিষয়ে দেখব বলে প্রধান বিচারপতি আশ্বস্ত করেন তাদের। এ ঘটনায় প্রকাশিত দেশের জাতীয় পত্রিকার প্রতিবেদন তারা আদালতে উপস্থাপন করেন।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আমরা দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবী সমিতি। ঘটনা ঘটার পর আমরা গতকাল (২৩ জুলাই) সোমবার পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করেছি। আমরা অপেক্ষা করেছি, দেখি দেশের সর্বোচ্চ আদালত কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করলাম আজ পর্যন্ত ওই ঘটনার বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ জন্য সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগে হাজির হয়েছি পত্রিকা নিয়ে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।

তিনি জানান, আমরা প্রধান বিচারপতিকে বলেছি, এই আদালত (সুপ্রিম কোর্ট) সংবিধানের অভিভাবক। দেশের সব আদালতের অভিভাবক। সুপ্রিম কোর্ট জনগণেরও অভিভাবক। সাধারণ মানুষ আদালতে যায় এবং সেই আদালত যদি জনগণের নিরাপত্তা দিতে না পারে তাহলে আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা থাকবে না।

মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে আমরা বেশ কিছু জাতীয় পত্রিকা দেখিয়েছি। অনেকগুলো পত্রিকা ওনার হাতে দিয়েছি। ওই ঘটনার কথা বলেছি। প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগ আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। শুনে তারা বলেছেন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তারা দেখবেন।

আপনারাতো এটা নিয়ে মামলা করতে পারতেন কিংবা হাইকোর্টে রিট দায়ের করতে পারতেন, সরাসরি আপিলে কেন গেলেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, এটা কোর্ট আঙ্গিনার ঘটনা। কোর্ট আঙ্গিনায় প্রত্যেক বিচারপ্রার্থীর নিরাপত্তা দেয়া প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব। এ ঘটনায় ওই কোর্ট থেকে মামলা করবে। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে আমরা আশা করি ওইখানকার কোর্ট অফিসার মামলা করবে। তারা মামলা করলে সেটা সিরিয়াস মামলা হবে। এ কারণে আমরা ব্যক্তিগতভাবে মামলা করিনি। সব আদালতের অভিভাবক হিসেবে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব সব আদালতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা। এজন্যই আমরা প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’

মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনা উল্লেখ করে পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রীর বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিককে কটূক্তির অভিযোগে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষারের করা মানহানির মামলায় গত ২২ জুলাই সশরীরে কুষ্টিয়ার আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন মাহমুদুর রহমান। শুনানি শেষে বেলা ১১টায় তার জামিন মঞ্জুর করেন কুষ্টিয়ার সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এমএম মোর্শেদ।

মাহমুদুর রহমানের জামিন মঞ্জুর করায় ক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা দুপুর ১২টা থেকে আদালত এলাকা ঘিরে রাখে। বেলা ১টার দিকে মাহমুদুর রহমান তার সঙ্গীদের নিয়ে আদালত থেকে বের হওয়ার সময় আদালত ভবনের প্রতিটি দরজায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে পথ আটকে দেয়। এ সময় তিনি পুনরায় আদালতের এজলাসে আশ্রয় নেন। পরে বিকেলে আদালত এলাকা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এফএইচ/জেএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।