মামলার প্রথম আইও দুর্নীতির সম্পৃক্ততা পাননি : খালেদার আইনজীবী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৩৮ পিএম, ১৭ জুলাই ২০১৮
ফাইল ছবি

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) নুর আহমেদ তার অনুসন্ধান প্রতিবেদনে খালেদা জিয়াকে সম্পৃক্ত করেননি। অথচ অপর তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ মাত্র চারদিনের মধ্যে খালেদা জিয়াকে মামলায় সম্পৃক্ত করেছেন বলে আদালতে যুক্তি দেখান খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী।

মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে খালেদা জিয়ার আপিলের শুনানিকালে আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী একথা বলেন।

শুনানিতে খালেদা জিয়ার পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার আমিনুল হক, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, জয়নুল আবেদীন, আমিনুল ইসলাম, ব্যারিস্টার বদরোদ্দোজা বাদল, কায়সার কামাল, রাগীব রউফ চৌধুরী, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মো. ফারুক হোসেন, আনিছুর রহমান খান, আইয়ুব আলী আশ্রাফী, মির্জা আল মাহমুদ, সালমা সুলতানা সোমা, ব্যারিস্টার এহসানুর রহমান ও ফাইয়াজ জিবরান প্রমুখ।

মঙ্গলবার মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী হারুন অর রশিদ, মামলার ৩২তম সাক্ষী ও প্রথম অনুসন্ধান কর্মকর্তা নুর আহমেদ এবং ১২ ও ১৩ নম্বর সাক্ষীর সাক্ষ্য আদালতে উপস্থান করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী আবদুর রেজাক খান ও এ জে মোহাম্মদ আলী। এ সময় তাদের সহায়তা করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার নওশাদ জমির।

বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খালেদা জিয়ার আপিলের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর আগামীকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১০টা পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়।

শুনানিতে আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার প্রথম অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নুর আহমেদ তার অনুসন্ধান প্রতিবেদনে খালেদা জিয়াকে সম্পৃক্ত করেননি। অথচ মাত্র চারদিনের মধ্যে একটি নতুন তদন্ত শেষ করে অন্য একজন তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ তার অনুসন্ধানের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে সম্পৃক্ত করেছেন।

শুনানির এক পর্যায়ে অন্য আইনজীবী আবদুর রেজাক খান বলেন, আমি বেনিফিট অফ ডাউটের কথা বলছি না, আমি বলছি- বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এই মামলা প্রমাণ হয়নি।

তিনি আরও বলেন, তথ্য প্রমাণ ছাড়াই এই মামলায় খালেদা জিয়াকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তার সমস্ত জীবনকে বাধা বিঘ্ন সৃষ্টি ও পর্যদুস্ত করতেই এই মামলা করা হয়েছে।

আর এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের একমাত্র সাক্ষী, মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ। তিনি ছাড়া অন্যকোনো সাক্ষী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কিছু বলেনি। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর অফিস বা সোনালী ব্যাংক থেকেও কোনো তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তার বিরুদ্ধে কোন কিছু নেই।

তিনি বলেন, এ মামলার অন্য এভিডেন্স মেলালে দেখা যাবে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো কিছু প্রমাণ হয়নি। আমি বলছি, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এই মামলা প্রমাণ হয়নি।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ বিচার শেষে গত ৮ ফেব্রুয়ারি রায় দেন। রায়ে খালেদা জিয়াকে ৫ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে গত ২০ ফেব্রুয়ারি আপিল আবেদন করেন খালেদা জিয়া। এ আপিল গত ২২ ফেব্রুয়ারি গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। নিম্ন আদালতের দেয়া জরিমানার রায় স্থগিত করেন। পরবর্তীতে গত ১২ মার্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট।

এ জামিনের বিরুদ্ধে আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও রাষ্ট্রপক্ষ। এ আবেদনে গত ১৬ মে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দেন। তবে, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার আপিল নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।

অন্যদিকে, এ মামলার আসামি কাজী সলিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমদের করা আপিলের ওপরেও একই সঙ্গে শুনানির আদেশ দেন আদালত। নিম্ন আদালত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কাজী সলিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমদকে ১০ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে।

এফএইচ/জেএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।