মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স কেন সাড়ে ১২ : হাইকোর্টের প্রশ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৫২ পিএম, ১৫ জুলাই ২০১৮

১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যূনতম বয়স ১২ বছর ছয় মাস নির্ধারণ করে জারি করা পরিপত্র কেন আইনগত কর্তৃত্ব-বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না- জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মন্ত্রণালয়ের সচিব ও যুগ্ম সচিব, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ সচিব, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতরের মহাপরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতরের পরিচালক মাহমুদ হাসানের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে এদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এ আর এম কামরুজ্জামান কাকন ও শুভ্রজিৎ ব্যানার্জি। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল।

শুনানি শেষে রিটকারী আইনজীবী কামরুজ্জামান কাকন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাদী মাহমুদ হাসান ১৯৮৮ সালের ২৬ জুন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতরে যোগ দেন। জন্মতারিখ অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর তার বয়স হয় ১২ বছর চার মাস ১২ দিন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর গত ২ মার্চ এক অফিস আদেশে বাদীকে বলেন, ‘১৭ জুলাই তার বয়স ৫৯ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। সরকারি বিধি অনুযায়ী ১৮ জুলাই থেকে তার অবসরোত্তর ছুটি (পিআরএল) শুরু হবে। এ অবস্থায় ছুটি ভোগ করতে চাইলে তাকে আবেদন করতে বলা হয়।’

পরবর্তীতে বিদ্যুৎ, জ্বলানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এক অফিস আদেশে জানায়, ‘গত ১৭ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যূনতম বয়স ১২ বছর ছয় মাস নির্ধারণ করে যে সংশোধিত পরিপত্র জারি করে তার সঙ্গে বাদীর বয়স সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’

আইনজীবী কামরুজ্জামান কাকন বলেন, ‘পাবলিক সার্ভিস রিটায়ারমেন্ট অ্যাক্ট ১৯৭৪ অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ৬০ বছর পর্যন্ত তার চাকরির মেয়াদ থাকার কথা। ফলে তার প্রতি যে অফিস আদেশ দেয়া হয়েছে তা স্পষ্টতই এ আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যে কারণে তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জারি করা গেজেট, সংশোধিত পরিপত্র ও অফিস আদেশটি চ্যালেঞ্জ করে গত সপ্তাহে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। আজ সেটির ওপর শুনানি শেষে আদালত রুল জারির পাশাপাশি অফিস আদেশটির কার্যকারিতা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন।’

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে প্রকাশিত প্রথম গেজেটে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যূনতম বয়স হতে হবে ১৩ বছর। এরপর গত ১৭ জানুয়ারি একটা পরিপত্রের মাধ্যমে সে গেজেট সংশোধন করে বলা হয় ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যূনতম বয়স হতে হবে ১২ বছর ছয় মাস।

এফএইচ/এমএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

আরও পড়ুন