নেত্রকোনার চারজনের বিরুদ্ধে চতুর্থ সাক্ষীর জবানবন্দি পেশ
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নেত্রকোনার দুর্গাপুরের খলিলুর রহমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের চতুর্থ সাক্ষী মো. নেছার আহম্মেদ জবানবন্দি পেশ করেছেন।
সাক্ষীর জবানবন্দি শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী তাকে জেরা করেন। জেরা শেষে মামলার পরবর্তী সাক্ষীর জন্য আগামী ৬ আগস্ট দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
সোমবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর রানাদাশ গুপ্ত। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন গাজী এম এইচ তামিম।
জবানবন্দিতে সাক্ষী বলেন, একাত্তরের ২৯ অক্টোবর আসামিরা রাজাকার ও পাকিস্তানি আর্মি নিয়ে আমার দাদা মমরুজ আলীর বাড়িতে আসে। এরপর তারা আমার চাচা ফাজিল উদ্দিনসহ ছয়জনকে দড়ি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যায় এবং বাড়িঘরে লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দেয়। আটককৃতদের মধ্যে আমার দাদা ও চাচাসহ পাঁচজনকে কাঁটাখালী নদীর পাড়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। একজন পালিয়ে যায়।
সাক্ষী তার জবানবন্দিতে বলেন, আমার নাম মো. নেছার আহম্মেদ। আমার বয়স ৬০/৬১ বছর। ঠিকানা- গ্রাম নোয়াগাঁও, থানা দুর্গাপুর, জেলা- নেত্রকোনা। ফাজিল পাস করেছি। বর্তমানে দুর্গাপুর থানার ফুলপুর মাদরাসার অফিস সহকারী। একাত্তরের ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টার দিকে ইফতারের সময় আসামি খলিলুর রহমান, আজিজুর রহমান, রমজান আলী, শাহ নেওয়াজ ও আশিক আলীসহ ৪০/৫০ জন রাজাকার, আলবদর ও পাকিস্তানি আর্মি আমার দাদা মমরুজ আলীর বাড়িতে আসে।
তিনি বলেন, আসার সময় আমার চাচা ফাজিল উদ্দিন, ভগ্নিপতি আব্দুল কাদির ওরফে রাজা মিযা, তার ছেলে আবুল হোসেন, প্রতিবেশী সমির উদ্দিন ও তার ছেলে শরাফত আলীকে দড়ি দিয়ে বেঁধে তাদের বাড়ি থেকে লুটপাটকৃত মালামাল নিয়ে আসে। মমরুজ আলীকে তারা পিছমোড়া করে বেঁধে ফেলে। এরপর আটককৃত এই ছয়জনকে আসামিরা পাকিস্তানি আর্মিসহ নাজিরপুরের দিকে যায়।
তিনি আরও বলেন, আমার চাচা মজনু মিয়াকে কাঁদতে কাঁদতে তাদের পেছনে যেতে দেখি। এরপর ওইদিনই রাত ৮টার দিকে উত্তর দিক থেকে ৭/৮টি গুলির শব্দ শুনি। আমার চাচা মজনু মিয়া বাড়িতে এসে জানায় যে, আটককৃতদের কাঁটাখালী নদীর পাড়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে। আটককৃতদের মধ্যে পাঁচজন গুলিতে নিহত হন। আবুল হোসেন নদীতে ঝাপিয়ে আত্মরক্ষা করে।
এফএইচ/বিএ