খালেদার আপিল শুনতে হবে ‘এইট-জি’ গতিতে : হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:০০ পিএম, ০৯ জুলাই ২০১৮
ফাইল ছবি

‘দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার করা আপিল আবেদন যদি গত সপ্তাহ থেকে শুনানি শুরু করতাম তাহলে আমরা ‘ফাইভ-জি’ গতিতে শুনানি করতে পারতাম। কিন্তু তা না হওয়ায় এখন হয়েতো ‘এইট-জি’ গতিতে শুনতে হবে।’ নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া, কাজী সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদের করা আপিল এবং খালেদা জিয়ার সাজা বাড়াতে দুদকের করা আবেদনের ওপর শুনানিতে এসব কথা বলেন হাইকোর্ট।

সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এই মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার আপিলের শুনানি আবারো পিছিয়েছে। আগামী ১২ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টায় শুনানি করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালত বলেছেন, কোনো পক্ষ থাকুক আর নাই থাকুক ওইদিন শুনানি শুরু করা হবে। এছাড়া জামিন বাড়ানোর বিষয়ে হাইকোর্টে ১২ জুলাই বৃহস্পতিবার আদেশ দেয়া হবে।

শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী সময়ের আবেদন করেন। সময় আবেদনে তিনি বলেন, আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদনের ওপর আদেশ হবে ১২ জুলাই। এ পর্যন্ত শুনানি করা ঠিক হবে না।

তিনি আরো বলেন, আমরা আপিল শুনানির বিপক্ষে নই। আপিলের পূর্ণাঙ্গ শুনানি শেষে যা হবার তাই হবে। ৩১ জুলাই পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া সময় যদি ঠিক থাকে তাহলে এক গতিতে শুনানি করতে হবে। আর যদি এই বাধা না থাকে তাহলে আরেক গতিতে শুনানি করতে হবে। তাই আপিল বিভাগের আদেশ পর্যন্ত সময় দেয়া হোক।

এই আবেদনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা এবং দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করা হলেও কোনো স্থগিতাদেশ নেই। আপিলের শুনানি শুরু করতে তাদেরও আপত্তি নেই। তারা বলেন, এই মামলায় পেপারবুক অনেক বড়। শুনানি করতে অনেক সময় লাগবে। তাই এখনই শুনানি শুরু করা হোক।

এ সময় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত শরফুদ্দিন আহমেদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহসান উল্লাহ বলেন, খালেদা জিয়ার আপিল ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশনা রয়েছে। এই আদেশ কি অন্য আপিলকারীর ক্ষেতে প্রযোজ্য কি-না তা স্পষ্ট হওয়া দরকার। কারণ ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করতে হলে আমাদের হাতে সময় থাকছে না। এ কারণে দ্রুত প্রস্তুতি নিয়ে শুনানি করতে হবে। আর তা যদি না হয় তবে আমাদের হাতে সময় থাকছে।

আদালত বলেন, যেহেতু সব আপিলগুলোই একসঙ্গে শুনানি করতে বলা হয়েছে তাই সবার ক্ষেত্রেই একই আদেশ বলে মনে করি। এই কথা শোনার পর এ আইনজীবী বলেন, তাহলেতো আমাদের হাতে সময় কম। আমরা সময় পাচ্ছি না। তাই আমরা শুনানি শুরু করতে চাই।

এ সময় আদালত বলেন, গত সপ্তাহে যদি শুনানি শুরু করতে পারতাম তাহলে আমরা ‘ফাইভ-জি’ গতিতে শুনানি করতে পারতাম। কিন্তু তা না হওয়ায় এখন হয়েতো ‘এইট-জি’ গতিতে শুনতে হবে।

আসামি শরফুদ্দিন আহমেদের আইনজীবীর বক্তব্যের বিরোধিতা করে এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, পুরো মামলা একসঙ্গে শুনানি করাই যথাযথ হবে।

অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা আরো বলেন, একজন শুনানি করতে চাইলে অন্যজনতো বাধা দিতে পারে না। এটা করার অধিকারতো কারো নেই। তাই শুনানি শুরু করা হোক।

এরপর খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন বাড়ানোর জন্য আবেদন জানান এজে মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, হাইকোর্ট জামিন দেয়ার পর তা স্থগিত করে দিলেন আপিল বিভাগ। এরপর জামিন বহাল রাখলেন। কিন্তু আদেশে স্বাক্ষর করতে সময় নিলেন একমাস। ফলে জামিন নিয়েও লাভ হলো না। জামিনের বিষয়টি ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে। জামিন আদেশ হাতে রয়েছে। সেটা দেখছিও। কিন্তু সেটা আবার নেই। আপিল বিভাগের কারণেই এটা শেষ হয়ে গেলো। এটা যেন মরীচিকার মতো। এই দেখছি, আবার নেই। তাই জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন জানাচ্ছি।

জবাবে আদালত বলেন, এ বিষয়ে আগামী ১২ জুলাই আদেশ দেয়া হবে।

এফএইচ/এসএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।