নবম ওয়েজ বোর্ড গঠন কেন অবৈধ নয় : হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৩০ পিএম, ০২ জুলাই ২০১৮

সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থায় কর্মরত সাংবাদিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণে তথ্য সচিব কর্তৃক নবম মজুরি বোর্ড (ওয়েজ বোর্ড) গঠন কেন অবৈধ ও বেআইনি (আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত) ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তথ্য সচিব, শ্রম সচিব ও ওয়েজ বোর্ডের চেয়ারম্যান নিজামুল হক নাসিমকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতের এ নির্দেশনা বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে বিবাদীদের কাছেও পৌঁছে দিতে আদেশে বলা হয়েছে। তবে রিটকারীর পক্ষ থেকে ওয়েজ বোর্ডের কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ চাইলেও আদালত এ সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেননি।

রুল জারির বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল।

নিউজপেপারর্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (নোয়াব) সভাপতি দৈনিক প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম. ইউসুফ আলী। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলএকরামুল হক টুটুল।

এর আগে গত মাসে নোয়াবের পক্ষ থেকে রিট আবেদনটি করা হয়। রিট আবেদনে বলা হয়, তথ্য মন্ত্রণালয় অবৈধভাবে নবম ওয়েজ বোর্ড গঠন করেছে। এটা গঠনের দায়িত্ব শ্রম মন্ত্রণালয়ের। রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী।

২০১৫ সালে সরকারি কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণার পর থেকে নতুন বেতন কাঠামোর দাবি জানিয়ে আসছে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো। ওই দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছেন তারা। এমন প্রেক্ষাপটে চলতি বছর ২৯ জানুয়ারি আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নিজামুল হককে প্রধান করে ১৩ সদস্যের ওয়েজ বোর্ড কমিটি গঠন করে আদেশ জারি করে তথ্য মন্ত্রণালয়।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু গত এপ্রিলে বলেছিলেন, সেপ্টেম্বরের মধ্যে নতুন বেতন কাঠামো কার্যকরের সব প্রস্তুতি শেষ করা হবে। তার আগে মহার্ঘ্য ভাতা ঘোষণার জন্যও সব প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এর মধ্যেই ওয়েজ বোর্ডের কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ চেয়ে রিট করেন নোয়াব সভাপতি মতিউর রহমান।

রিটকারীর আইনজীবী ইউসুফ আলী সাংবাদিকদের বলেন, ‘সংবিধানের ৫৫ (৬) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি যে রুলস অব বিজনেস করে দিয়েছেন, সে অনুযায়ী সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ড গঠন করার ক্ষমতা শ্রম মন্ত্রণালয়ের। তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েজবোর্ড গঠনের এখতিয়ার নাই।’

‘তাছাড়া তথ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো এনফোর্সমেন্ট মেকানিজম নাই (প্রাতিষ্ঠানিক পরিকাঠামো) যে, তারা ওয়েজ বোর্ড কার্যকরের জন্য কাজ করতে পারে। শ্রম মন্ত্রণালয়ের সে পরিকাঠামো আছে। যেমন- কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের প্রায় পাঁচশ পরিদর্শক আছে সারাদেশে।’

‘ফলে শ্রম মন্ত্রণালয় এটা খুব সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে। আর তথ্য মন্ত্রণালয় ওয়েজ বোর্ডের ঘোষণা দিয়েই খালাস। তারা এসব বিষয়ে সুষ্ঠু তদারকি না করায় হাতেগোণা কয়েকটি পত্রিকা ছাড়া ওয়েজ বোর্ডের বাস্তবায়ন হয় না। এসব কারণ উল্লেখ করে আমরা রিটটি করেছি।’

সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থার কর্মীদের বেতন গড়ে তাদের মূল বেতনের ৭৫ শতাংশ বাড়িয়ে ২০১৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর অষ্টম মজুরি কাঠামো ঘোষণা করে সরকার, যা ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়।

এরপর মূল্যস্ফীতি ও বাজার দর বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সাংবাদকর্মীদের দাবির মুখে সরকার ২০১৬ সালের অক্টোবরে নবম ওয়েজ বোর্ড গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কাছে প্রতিনিধির নাম চায়। কিন্তু সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াব প্রতিনিধির নাম না দেয়ায় ওয়েজ বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয় বলে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অভিমত।

এফএইচ/এমএমজেড/পিআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।