খালেদা জিয়া জেলে বেশি সুবিধা পাচ্ছেন : আইনমন্ত্রী
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জেল কোডে থাকা বিধি-বিধানের চেয়ে বেশি সুবিধা পাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজদের ৩৭তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আইনের মাধ্যমে এগোচ্ছি। আদালত কাউকে শাস্তি দিলে সে কারাগারে যান। কারাগারের যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার ক্ষেত্রে জেল কোড প্রযোজ্য হয়। খালেদা জিয়া জেল কোডে যা আছে তার থেকে বেশি সুবিধা এখন পাচ্ছেন। সেই ক্ষেত্রে জেল কোডের ব্যত্যয় ঘটানো বা আইনের ব্যত্যয় ঘটানোর কোনো কারণ এখনও উদ্ভব হয়নি। আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কিছু করার ক্ষমতা সরকারের নেই বলে জানান আইনমন্ত্রী।
আপিল বিভাগে বিচারক নিয়োগ নিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আপিল বিভাগের বিচারক সংকট আছে -কথার সঙ্গে আমি একমত নই। এর আগে সাতজন বিচারক ছিল। বহুবছর পাচঁজন বিচারক দিয়ে আপিল বিভাগ চলেছে। তার থেকে এখন মামলা বেড়েছে কথাটা ঠিক। বর্তমান বিচারক যারা আছেন, তারা কিন্তু বহুদিন যাবত চালিয়ে যাচ্ছেন, মামলার সংখ্যা কিন্তু কমে আসছে। একেবারেই সংকট আছে সেই ক্ষেত্রে আমি দ্বিমত পোষণ করি। তারপরেও আপিল বিভাগে শিগগিরই বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে সহকারী জজদের ৩৭তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন করেন আইনমন্ত্রী। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা রাখেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক, বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) গোলাম কিবরিয়া।
প্রশিক্ষণার্থী সহকারী জজদের উদ্দেশ্যে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচারকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য। কোয়ালিটি জুডিশিয়ারির ওপর শুধু আইনের শাসনই নয়; অর্থনৈতিক উন্নয়ন, গনতন্ত্র সুসংহতকরণ এবং দারিদ্র্য দূরীকরণও নির্ভর করে। তিনি বলেন, ‘সরকার দেশে বিদ্যমান মামলাজট কমাতে নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছে।’
ডিজিটাল যুগের বিচারক হিসেবে নবীন বিচারকদের বিজ্ঞান-মনস্ক ও ইনোভেটিভ আইডিয়া সমৃদ্ধ উদ্যোগ গ্রহণে গুরুত্বারোপ করেন আইনমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আদালত বিচারপ্রার্থী মানুষের শেষ ভরসাস্থল। সেখানে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের সৎ ও নিষ্ঠাবান হতে হবে। বিচারকের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রশিক্ষণের মেয়াদ ২ মাস থেকে পর্যায়ক্রমে ৪ ও ৬ মাস করার কথা জানান তিনি।
সম্মানিত অতিথির বক্তৃতায় আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক বলেন, ‘বিচারকদের সততার কোনো বিকল্প নেই। বিচারকের মর্যাদা বিচারকদের রক্ষা করতে হবে। তাদের চলা ও আচরণে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয়। বিচারপ্রার্থী জনগণ যেন হররানির শিকার না হয়, সেদিকটি বিচারকদের নিশ্চিত করতে হবে।’
এফএইচ/এসআর/জেআইএম