খালেদার সাজা বাড়ানো ও আপিল শুনানিতে প্রস্তুত দুদক
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে করা আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবীরা। মঙ্গলবার জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
তিনি বলেন, ‘আমরা মামলার নকল কপি হাতে পেয়েছি। এখন দিন-তারিখ ঠিক করার জন্য আমরা আদালতে যাব।’ অন্যদিকে বিচারিক আদালতে ওই মামলায় খালেদার পাঁচ বছরের সাজা বাড়ানোর জন্য দুদকের পক্ষে করা আবেদনের ওপরও শুনানি হতে পারে বলে জানান খুরশীদ আলম।
প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এরপর থেকে তিনি নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার পুত্র ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে দণ্ড দেন আদালত।
রায় ঘোষণার ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রায়ের সার্টিফায়েড কপি বা অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল আবেদন দায়ের করেন তার আইনজীবীরা। ১২ মার্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের দেয়া ওই জামিন স্থগিত চেয়ে পরের দিন ১৩ মার্চ আপিল আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক।
দুদকের এই আইনজীবী আরও বলেন, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনা রয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী ঈদের ছুটি ও সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ শেষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে আপিল শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে বলেও জানান তিনি।
ওই মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া চার মাসের জামিন বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ গত ১৬ মে ওই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে একই সঙ্গে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে পাঁচ বছরের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে করা খালেদার আপিল নিষ্পত্তি করার জন্যও বলেন আপিল বিভাগ।
খুরশীদ আলম বলেন, ইতোমধ্যে আপিল বিভাগের রায় বের হয়েছে। আপিল বিভাগের রায়ে হাইকোর্টে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিলটি নিষ্পত্তির বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বর্তমানে আদালতে অবকাশ চলছে। অবকাশ শেষ হওয়ার পর আদালত খোলার শুরুতেই আপিল আবেদনটির শুনানির জন্য হাইকোর্ট বিভাগের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে যাব আমরা। কারণ এ মামলার পেপারবুকও (আপিল শুনানির জন্য প্রয়োজনীয় নথি) প্রস্তুত রয়েছে। সেটি আমরা রিসিভও করেছি।
তিনি আরও বলেন, শুধু খালেদা জিয়ার আপিলই নয়, অপর দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির আপিল এবং খালেদা জিয়া সাজা বৃদ্ধি সংক্রান্ত দুদকের করা আবেদনে হাইকোর্টের জারি করা রুলের ওপর একসঙ্গে শুনানি অনুষ্ঠিত হতে পারে।
গত ১৬ মে খালেদাকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বাতিলে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের করা আপিল খারিজ করে দিয়ে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রায় দেন।
এছাড়া নিম্ন আদালতের দেয়া পাঁচ বছরের সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া যে আপিল করেছেন সে আপিল বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এফএইচ/জেএইচ/এমএআর/এমআরএম