বাসচাপায় আহত নুরুলকে দেড় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৪৯ পিএম, ১০ জুন ২০১৮

মহাখালীতে ৬ নম্বর পরিবহনের বাসচাপায় আহত নুরুল আমিন চৌধুরীকে দেড় কোটি টাকা কেন ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ ঘটনার দায় ও ক্ষতিপূরণ নিরূপণে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে সড়ক ও জনপথ সচিবকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক ও জনপথ সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি চেয়ারম্যান, পুলিশের গুলশান জোনের উপকমিশনার, ট্রাফিক পুলিশের উত্তর বিভাগের উপকমিশনার ও বনানী মডেল থানার ওসি, ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মো. মনসুর ও ৬ নম্বর বাসের মালিককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

জনস্বার্থে অ্যামেনেস্টি বেঙ্গলের দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন। অ্যামেনেস্টি বেঙ্গলের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. দেওয়ান এম এ ওবাঈদ হোসেন।

এর আগে গত সপ্তাহে অ্যামেনেস্টি বেঙ্গলের পক্ষে প্রধান নির্বাহী অধ্যক্ষ ড. রেজিনা বানু হাইকোর্টে এ রিট দায়ের করেন। আজ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন আদালত।

আইনজীবী ড. দেওয়ান এম এ ওবাঈদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার পর জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আজ আদালত রুল জারি করেছেন। রুলে জনগণের মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ণ করে এমন বেপরোয়া যান চলাচল রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা কেন বেআইনি হবে না, বাসচাপায় পা বিচ্ছিন্ন হওয়া নুরুল আমিন চৌধুরীকে দেড় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হবে না, এ ঘটনায় দায় এবং ক্ষতি নিরূপণে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি কেন গঠন করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

এছাড়া ক্ষতি এবং দায় নিরূপণে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে সড়ক ও জনপথ সচিবকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান ড. দেওয়ান এম এ ওবাঈদ হোসেন।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাসের চাপায় থেঁতলে যাওয়া পা সংক্রমিত হয়ে এখন জীবনশঙ্কায় রয়েছেন নুরুল আমিন (৫৬)। রাজধানীর মহাখালীতে দুই বাসের প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়েন তিনি। একটি বাস তার পায়ের ওপর রেখেই পালিয়ে যান চালক। উপস্থিত লোকজন বাস কাত করে তার পা বের করে নিয়ে আসেন। গত ১৭ মে খিলগাঁওয়ের প্রকাশনা ব্যবসায়ী নুরুল আমিনের ডান পা ছয় নম্বর পথের একটি বাসের চাপায় থেঁতলে হাঁটুর নিচ থেকে মাংসপেশি খসে পড়ে গেছে। ওই দিন তাকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) ভর্তি করা হয়েছিল। নুরুল আমিনের জামাতা নুরুল ইসলাম সাংবাদিককে বলেন, তার ডান পায়ের সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। পায়ে পোকা ধরেছে। তাকে পঙ্গু হাসপাতাল থেকে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এখন সেখানে তিনি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছেন। তার ডান পা কেটে ফেলতে হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে এখনই সেই অস্ত্রোপচার করা যাচ্ছে না। সংক্রমণ থেকে তার শরীরে আরও নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে।’

‘নুরুলের ওপর নির্ভরশীল তার দুই ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রী। তিনি দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর থেকে অকূলপাথারে পড়েছে পরিবারটি।’

‘বনানী থানার পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বাসটি আটক করা হয়েছে। তবে আহত ব্যক্তির পরিবার এ বিষয়ে কোনো মামলা করেনি।’

‘আহত নুরুল আমিনের জামাতা নুরুল ইসলাম বলেন, নুরুল আমিনকে বাঁচাতে হাসপাতাল, চিকিৎসকদের কাছে দৌড়াদৌড়ি করেই তারা কূল পাচ্ছেন না। এ কারণে থানায় যেতে পারেননি। তবে একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সেই কর্মকর্তা বাসমালিকের সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে তারা সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছেন।

এফএইচ/বিএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।