‘দুর্ভাগ্য, অ্যাটর্নির সম্মতি ছাড়া খালেদার আদেশ হচ্ছে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৩৫ পিএম, ১০ জুন ২০১৮

খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন অভিযোগ করেছেন, অ্যাটর্নি জেনারেলের সম্মতি ছাড়া দেশের সর্বোচ্চ আদালত কোনো আদেশ দিচ্ছে না বলে মনে হচ্ছে। এ ধরনের অবস্থায় কত দিন আইনজীবীরা সুপ্রিমকোর্টের উপর আস্থা রাখতে পারবে?

খালেদার সিনিয়র এই আইনজীবী বলেন, ‘কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য! আমরা ক্ষুব্ধ, লজ্জিত এই কারণে যে, অ্যাটর্নি জেনারেল যেহেতু আপিল বিভাগে যাবেন, সেহেতু আজকে এটা মুলতবি করা হলো। এর অর্থ অ্যাটর্নি জেনারেলের সম্মতি ছাড়া মনে হচ্ছে আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত কোনো আদেশ দিচ্ছে না।’

হতাশা প্রকাশ করে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল সময় চেয়েছেন, আদালত তাকে সময় দিয়েছেন। আবার তিনি সময় চাইবেন, হয়তো আবার সময় দেবেন।’

আজ রোববার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা কুমিল্লার নাশকতার মামলায় শুনানি শেষে এক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘আদালতে আমরা বলেছিলাম, যে কারণে ট্রাইব্যুনাল (বিচারিক আদালত) তার জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন, সেটা সঠিক না। সেখানে বলা হয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়ে আসেনি, সেই কারণে জামিনের আবেদন শোনা যায় না। খালেদা জিয়া জেলে। অতএব, গ্রেফতারি পরোয়ানার কোনো প্রশ্ন আসে না। এই একই আদেশের বিরুদ্ধে ভিন্ন একটি সিনিয়র বেঞ্চ আদেশ দিয়েছেন যে, ‘বিচারক ভুল পথে অগ্রসর হয়েছেন। ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জামিন আবেদনের সঙ্গে গ্রেফতারি পরোয়ানার কোনো সম্পর্ক নেই। অতএব অবিলম্বে তার জামিনের আবেদনের শুনানি করা হোক।’এই একই ধরনের একটি আদেশ নিয়ে আমরা এই কোর্টে আবেদন করেছি।’

তিনি বলেন, ‘কুমিল্লায় একই ঘটনার উপরে দুটি চার্জশিট হয়েছে। তার মধ্যে একটি ৩০২ ধারায় আরেকটি বিশেষ ক্ষমতা আইনে। ৩০২ ধারার মামলায় আমরা জামিন পেয়েছি; যা আপিল বিভাগে মুলতবি (শুনানির জন্য) আছে।’

খালেদার এই আইনজীবী বলেন, ‘গতকাল (অ্যাটর্নি জেনারেল) মোটামুটিভাবে এগ্রি করে গিয়েছিলেন যে আদেশের কপি দেখেননি। কিন্তু আজ তিনি ভিন্নরূপে আবির্ভূত হয়েছেন। অ্যাটর্নি বলেছেন, সরকারের নির্দেশ বা সিদ্ধান্ত হলো হাইকোর্টের সিনিয়র বেঞ্চটি যে আদেশ দিয়েছেন, ওই আদেশের বিরুদ্ধে আমরা আপিল দায়ের করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আদালতকে বললাম, উনি কখন (আপিলে) যাবেন, সেটা জানি না। যেহেতু এখনও আপিল দায়ের হয়নি, আপিল থেকে কোনো আদেশ হয়নি, সেহেতু আপনাদের আদেশ দিতে কোনো বাধা নেই। তাছাড়াও আমরা ট্রাইব্যুনালের যে আদেশের বিরুদ্ধে এসেছি, তা কতটা যুক্তিসঙ্গত আপনারা (বিচারপতিরা) দেখুন। সে অনুযায়ী আদেশ দিন।’

খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেলের যখন সম্মতি (খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে) হবে, আমাদের সেই (সময় পর্যন্ত) অপেক্ষায় থাকতে হবে। আর আমরা আস্থা রাখতে পারছি না।’

‘এই ধরনের অবস্থায় কত দিন আইনজীবীরা সুপ্রিমকোর্টের উপর আস্থা রাখতে পারবে? মানুষ হয়তো বা আমাদেরকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে আইন নিজেরাই হাতে তুলে নেবে, সেই দিনের অপেক্ষায় আমরা আছি।’

খালেদা জিয়া অসুস্থ, এ বিষয়ে আপনারা আইনজীবীরা কোনো আইনি পদক্ষেপ নেবেন কি না-জানতে চাইলে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আইনি পদক্ষেপ তো আমরা নিচ্ছিই।’

এফএইচ/এসআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।