পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার পাঁচজনকে ট্রাইব্যুনালে শ্যোন অ্যারেস্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:১৫ পিএম, ২৯ মে ২০১৮

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলায় পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার ফজলুল হক হাওলাদারসহ (৭৫) পাঁচজনকে (শোন অ্যারেস্ট) গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তবে, এই মামলার বিষয়ে পরর্বতী শুনানির জন্য কোনো দিন-তারিখ ঠিক করেননি আদালত।

ফজলুল হক হাওলাদার ছাড়া মামলার অপর আসামির হলেন- আবদুল মান্নান হাওলাদার (৭৪), আজহার আলী হাওলাদার ওরফে আজু মুন্সি (৮৮), আশরাফ আলী হাওলাদার (৬৭) ও চরখালীগ্রামের মহারাজ হাওলাদার ওরফে হাতকাটা মহারাজ (৬৮)।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের অন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার এই আদেশ দেন। আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, সাইদুর রহমান ও রেজিয়া সুলতানা চমন।

রেজিয়া সুলতানা চমন জাগো নিউজকে জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন গণহত্যা ও লুটপাটের দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ২১ মে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

উপজেলার ধাওয়া ইউনিয়নের হেতালিয়া ও নদমূলা ইউনিয়নের চরখালী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারেরর পর ওইদিনই তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

২০১৫ সালের ১০ অক্টোবর পিরোজপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভাণ্ডারিয়া উপজেলার ধাওয়া ইউনিয়নের যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা বিজয়কৃষ্ণ বালা এ মামলাটি করেন। পরে এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দলের সমন্বয়কারী মুহাম্মদ আবদুল হান্নান খানের নেতৃত্বে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে চার দফায় তদন্ত করে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। তদন্তে অভিযুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে গণহত্যার সত্যতা মেলে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলা সনের ৯ কার্তিক ভাণ্ডারিয়ার হেতালিয়া গ্রামের রাজাকার আমির হোসেন হাওলাদারের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ রাজাকার বাহিনী উপজেলার পশারী বুনিয়া গ্রামের হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। এ সময় রাজাকাররা আট মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাদের বনমালী গাছারু বাড়ি নামক স্থানে পুকুর পাড়ে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করে। তখন পশারীবুনিয়াগ্রামের নিরোদ চন্দ্র বালার ছেলে মুক্তিযোদ্ধা কৃষক বিজয়কৃষ্ণ বালা গুলিবিদ্ধ হয়ে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। রাজাকারদের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন মামলার বাদীর বাবা নিরোদ চন্দ্র বালা, ভাই রণজিৎ কুমার,ভগ্নিপতি সুখময়, কাকা গঙ্গাচরণ মিস্ত্রী, কাকাত ভাই অমূল্য মিস্ত্রী ও সমূল্য মিস্ত্রী।

ওই হত্যাযজ্ঞের প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলার সাক্ষী পশারীবুনিয়া গ্রামের কৃষক চিত্তরঞ্জন গাছারু বলেন, চার রাজারকার মিলে এলাকায় গণহত্যা, লুটপাট ও নারী নির্যাতন চালায়। তারা নিরীহ মানুষকে একলাইনে দাঁড় করিয়ে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে।

এফএইচ/জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।