শ্মশান দখল : আ.লীগ নেতাকে ব্যানার টানিয়ে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৪৯ পিএম, ২০ মে ২০১৮

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শতবর্ষী শ্মশানের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করার অভিযোগে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হককে ভর্ৎসনা করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই অপকর্মের জন্য ব্যানার বানিয়ে তা টানানোর পর স্থানীয় জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত এবং ওই ব্যানারের ছবি আদালতে দেখানোর জন্য বলা হয়েছে।

ক্ষমা চাওয়ার অনুষ্ঠানের ছবি আগামী রোববারের (২৭ মে) মধ্যে হাইকোর্টে উপস্থাপন করতে হবে। এ বিষয়ে ওইদিন পরবর্তী শুনানি এবং আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।

অভিযুক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হকের উপস্থিতিতে রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি একেএম সাহিদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে আজ রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুল হকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী লায়েকুজ্জামান মোল্লা।

আদালত বলেছেন, স্থানীয় জনগণের কাছে ওই অপকর্মের জন্য শ্মশানে ব্যানার লাগিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। ব্যানারে লিখতে হবে,‘শ্মশানের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ চেষ্টা করে আমি ভুল করেছি। এ ধরনের কাজ আর কোনোদিন করবো না।’

আদেশে আরও বলা হয়, ব্যানার টানিয়ে ক্ষমা চাওয়ার অনুষ্ঠানে শ্মশান কমিটিকে উপস্থিত রাখতে হবে। ক্ষমা চাওয়ার অনুষ্ঠানের ছবি আগামী রোববারের মধ্যে হাইকোর্টে উপস্থাপন করতে হবে। একইসঙ্গে দখলচেষ্টা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে আদালতে লিখিতভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলে বিষয়টি আদালত দেখবে। যদি অস্বীকার করা হয় তাহলে ওই আভিযোগ তদন্ত ছাড়াই আজিজুল হকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেয়ার আদেশ দেয়া হবে।

শতবর্ষী শ্মশান দখল করে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টার অভিযোগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হককে তলব করা হলে ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে আজ নির্ধারিত দিনে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে সশরীরে হাজির হন। তার উপস্থিতিতে শুনানি করার পর পরবর্তী শুনানির এই আদেশ দেন আদালত। এর আগে গত ১৩ মে এক আদেশে আজিজুল হককে আজ হাইকোর্টে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, শ্মশান দখল করা নিয়ে ২০১৬ সালের ২৬ জুন একটি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) একটি রিট করে। এ রিট আবেদনে ওই বছরের ৩১ জুলাই হাইকোর্ট রুল জারি করেন এবং স্থাপনা নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।

পাশাপাশি বিষয়টি তদন্ত করতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। এ নির্দেশে জেলা প্রশাসক বিষয়টি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ অবস্থায় ২০১৬ সালে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শুরু হয় হাইকোর্টে। এ রুলের ওপর শুনানির সময় গত ১৩ মে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতিকে তলব করে আদেশ দেন আদালত।

এফএইচ/বিএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।