খালেদার জামিন বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:১২ এএম, ১৬ মে ২০১৮

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার দায়ের করা হাইকোর্টের আপিল আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করার জন্য সংশ্লিষ্ট বেঞ্চকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

হাইকোর্টের দেয়া জামিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও রাষ্ট্রপক্ষের পৃথক দুই আপিলই খারিজ করে দিয়ে বুধবার সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন- বিচারপতি মুহাম্মদ ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।

এদিকে আপিল বিভাগ থেকে খালেদা জিয়া জামিন পেলেও অন্য মামলায় গ্রেফতার থাকায় আপাতত তিনি মুক্তি পাচ্ছেন না বলে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

খালেদার জামিন নিয়ে আপিল বিভাগের রায় ঘোষণার সময় আদালতে তার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এজে মুহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, মীর নাসির উদ্দিন, ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন, বদরোদ্দোজা বাদল, কায়সার কামাল, সানা উল্লাহ মিয়া, কামরুল ইসলাম সজল, ব্যারিস্টার আতিকুর রহমান, ফাইয়াজ জিবরান ও এহসানুর রহমান প্রমুখ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল মো. মমতাজ উদ্দিন ফকির, মুরাদ রেজা এবং দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।

এর আগে খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশর বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল নিয়ে দুইদিন (৮ ও ৯ মে) শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। খালেদা জিয়ার জামিন বাতিলের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং দুদকের পক্ষে খুরশিদ আলম খান।

অপরদিকে খালেদা জিয়ার জামিন বহাল রাখতে তার পক্ষে শুনানি করেন চার আইনজীবী। তারা হলেন- সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ, সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদন।

গত ১৯ মার্চ মামলাটি শুনানির জন্য ৮ মে দিন ধার্য করেছিলেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন একই বেঞ্চ। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) এবং আপিল বিভাগের স্থগিতাদেশ তুলে নেয়া সংক্রান্ত খালেদা জিয়ার আবেদনের ওপর এই শুনানি হয়।

গত ১২ মার্চ দুদকের আবেদনের শুনানি নিয়ে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। পাশাপাশি এ মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা কেন বাড়ানো হবে না -তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেন আদালত।

এরপর ১৯ মার্চ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ ৮ মে পর্যন্ত জামিন স্থগিতের আদেশ দেন। একই সঙ্গে আগামি দুই সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের আইনজীবীদের আপিলের সার-সংক্ষেপ জমা দিতে বলেন।

উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামানের আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয় আসামির প্রত্যেককে দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা করে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। রায়ের দিনই খালেদা জিয়াকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

এফএইচ/আরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।