‘মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির বয়সসীমা ৬০ থাকছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৩০ পিএম, ০৭ মে ২০১৮

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা ৫৯ বছর থেকে ৬০ বছর করে ২০১৩ সালে করা আইন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

আপিল বিভাগের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর চেম্বারজজ আদালত সোমবার এ আদেশ দেন।

অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এই আদেশের ফলে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা ৬০ থাকছে।’

গত ১১ এপ্রিল সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা ৫৯ বছর থেকে ৬০ বছর করে ২০১৩ সালে করা আইন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

আদালত বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা ৬১ বছর করা উচিত ছিল। কিন্তু সেটা না করা বৈষম্যমূলক। এ কারণে সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ৬১ বছর পর্যন্ত সব সুবিধা দেবে বলে মনে করি।

এ সংক্রান্ত রিটের চূড়ান্ত শুনানির পর মামলায় রায় ঘোষণার সময় হাইকোর্টের বিচারপতির গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।

আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সিদ্দিকুর রহমান খান ও অ্যাডভোকেট গাজী মোশতাক আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এস এম নাজমুল হক।

সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম মশির উদ্দিন ওয়ারেশী ও আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজার তপন কুমার সাহার রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ রায় দেন।

আদালত তার রায়ের অভিমতে বলেন, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা সাধারণ চাকরিজীবীদের চেয়ে দুই বছর বাড়িয়ে ৬১ বছর করার সিদ্ধান্ত দিয়ে তা বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয়কে বলেছিল। কিন্তু সরকার সেটা না করে এক বছর বাড়িয়ে ৬০ বছর করে। এতে জাতীয় সংসদের অভিপ্রায় আইনের মধ্যে প্রতিফলিত হয়নি।’

আদালত চাকরিতে অবসরের বয়সসীমা সংক্রান্ত গত কয়েক বছরের আইন সংশোধনের বিষয়ে বলেন, ‘সকলের অবসরের বয়সসীমা ছিল ৫৭ বছর। সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের বয়সসীমা দুই বছর বাড়িয়ে ৫৯ বছর করে তাদের সম্মানিত করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে সকলের চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা ৫৯ বছর করে সরকার। এ অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করতে তাদের অবসরের বয়সসীমা এক বছর বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু প্রথমে দুই বছর দিয়ে সম্মানিত করার পর এক বছর করার মধ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান খাটো করা হয়েছে।’

আদালত বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সরকার অন্যদের চেয়ে দুই বছর বাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু চাকরি থেকে অবসরের সুবিধা কমিয়ে দিয়ে আইন করা সরকারেরই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও অযৌক্তিক। পরে হাইকোর্টের এ রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ।’

সরকার ২০১৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আবার আইন সংশোধন করে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে অবসরের বয়সসীমা এক বছর বাড়িয়ে ৬০ বছর করে। এ অবস্থায় চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা দুই বছর বাড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে দুই মুক্তিযোদ্ধা গত বছর হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এ রিট আবেদনে রুল জারি করেন আদালত। এরপর রিট আবেদনকারীরা ২০১৩ সালের আইনের সংশোধনী বাতিল চেয়ে সম্পূরক আবেদন করেন।

এফএইচ/এমএআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।