ঢাকা বার নির্বাচনে ফের ভোট গণনা শুরু
বহিরাগতদের হামলায় স্থগিত হয়ে যাওয়া ঢাকা আইনজীবী সমিতির ২০১৮-১৯ কার্যবর্ষ নির্বাচনের ভোট গণনা ফের শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিট থেকে ভোট গণণা শুরু হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় ঢাকা বারের নিজস্ব ভবনের তৃতীয়তলায় ভোট গণনা শুরু হয়। কিন্তু রাত সাড়ে ১০টার দিকে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোন্দকার আবদুল মান্নান আহত হন।
নির্বাচন কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ মাহবুব জানান, ভোট গণনার সময় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা এসে হামলা করলে ভোট গণনা স্থগিত হয়ে যায়। ঘটনার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হান্নান ভূঁইয়া জানান, ভোট গণনার সময় অতর্কিতে হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবী কালাম খান জানান, ভোট গণনায় সাদা প্যানেলের প্রার্থীরা পিছিয়ে পড়ে। এরপরই ওই হামলা হয়।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গল ও বুধবার মোট ৯ হাজার ১১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। বৃহস্পতিবার ভোট গণনা শেষে শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণার কথা ছিল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের।
এ নির্বাচনে ২৭টি পদের বিপরীতে ৫৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেলের ২৭ জন এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের ২৭ জন। নির্বাচনে মৌসুমী বেগম নামে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।
নীল প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন- সভাপতি পদে গোলাম মোস্তফা খান, সাধারণ সম্পাদক পদে মো. হোসেন আলী খান হাসান, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম দেওয়ান, সহ-সভাপতি পদে এ আর মিজানুর রহমান, ট্রেজারার পদে মো. লুৎফর রহমান আজাদ, সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে মো. নিহার হোসেইন ফারুক, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে মো. সাখাওয়াত উল্লাহ ভুইয়া ছোটন, লাইব্রেরি সম্পাদক পদে এ বি এন ইফতেখারুল হক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে শাহনাজ বেগম শিরীন, দফতর সম্পাদক পদে মো. জুলফিকার আলী হয়দার জীবন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে এম এ বি এম খায়রুল ইসলাম লিটন এবং খেলাধুলা সম্পাদক পদে মোহাম্মাদ খলিলুর রহমান।
সদস্য পদে একতানদার হোসেন হাওলাদার বাপ্পি, হান্নান ভূঁইয়া, জাকিয়া সুলতানা মিষ্টি, মো. ইকবাল মাহমুদ সরকার, মো. মুকতাদির আহমেদ কাজল, মো. রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, মো. শাহীন হোসেন, মো. জাহেদ উল আলম জতি, মেহেদী হাসান বাদল, মো. ইব্রাহিম স্বপন, মো. ইয়াছিন মিয়া, মোসা. জেবুন্নেছা খানম জীবন, নজরুল হক সুভা, শারমিন জাহান শিমু ও জহুরা খাতুন জুঁই।
সাদা প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন- সভাপতি পদে আব্দুর রহমান হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক পদে মো. মিজানুর রহমান মামুন, সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী শাহানারা ইয়াছমিন, সহ-সভাপতি পদে মো. রুহুল আমিন, ট্রেজারার পদে আরিফুর রহমান চৌধুরী সুমন, সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার দিপু, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে মো. কামাল হোসেন পাটয়ারী, লাইব্রেরি পদে এম মনিরুজ্জামান মানির, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে তাছলিমা আক্তর রিতা, দফতর সম্পাদক পদে আব্দুর রশিদ, সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে হুমায়ুন খন্দকার টগর এবং খেলাধুলা সম্পাদক পদে সাদিয়া আফরীন শিল্পী।
সদস্য পদে আব্দুর রব খান পল্লব, আসাদুজ্জামান বাবু, মো. হাসান আকবার আফজাল, সুমন মিয়া, মো. নুরুদ্দিন, শেখ সাইফুর রহমান সুমন, মো. ইব্রাহিম হোসেন, মো. সাইফুজ্জামান টিপু, মোহা. আহসান হাবীন, সাদিয়া আফরোজা, সাবিনা আক্তার দিপা, মির্জা মো. জামাল হোসেন, মো. খায়রুল ইসলাম, সফাত নাহার সুমি ও তুষার ঘোষ।
উল্লেখ্য, প্রার্থীদের মধ্যে সাদা প্যানেলের সভাপতিসহ ১৩ জনই গতবারের পরাজিত প্রার্থী। ২০১৭-২০১৮ কার্যবর্ষের নির্বাচনে ২৭টি পদের মধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২১টি পদে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেল জয়লাভ করে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল মাত্র ছয়টি পদে জয়লাভ করেছিলেন।
২০১৬-১৭ মেয়াদের কার্যকরী কমিটি নির্বাচনে ২৭টি পদের মধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২১টি পদেই জয়ী হন আওয়ামী সমর্থীত আইনজীবীরা। অপরদিকে বিএনপি সমর্থীত নীল প্যানেল পেয়েছিলেন ৬টি পদ।
জেএ/এনএফ/এমএস