প্রশ্ন ফাঁস রোধে দুই কমিটি
এসএসসিসহ বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় বিভাগীয় এবং প্রশাসনিক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে কাকে কাকে দিয়ে কমিটি গঠন করা হবে তাও বলে দিয়েছেন আদালত। আদেশের কপি পাওয়ার সাতদিনের মধ্যে দুই কমিটিকে কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। আর তদন্ত শেষ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য দুই কমিটিকে সময় দেয়া হয়েছে ৩০ দিন।
এই ‘দুই কমিটি প্রশ্ন ফাঁস রোধে করণীয় এবং জড়িতদের খোঁজে বের করে তাদের কী শাস্তি দেয়া যায় তারও সুপারিশ করবেন’ বলে আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন। জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
তিনি বলেন, বুয়েটের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদের নেতৃত্বে প্রশাসনিক কমিটি এবং ঢাকা জেলা জজ ও অপর দুই দায়রা জজসহ পাঁচজনের সমন্বয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা বলা হয়েছে। এ দুই কমিটির সদস্য সংখ্যা হবেন পাঁচজন করে। এ দুই কমিটি গঠন করতে হবে আগামী সাতদিনের মধ্যে। কমিটি গঠন করার পরপরই তদন্ত শুরু করতে বলা হয়েছে।
দুই কমিটি করা ছাড়াও প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে সরকারের নিষ্কৃয়তা এবং ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশসহ রুল জারি করেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল খায়রুন নেসা।
রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জাগো নিউজকে আরো বলেন, একের পর এক প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় একটি রিট আবেদনের শুনানিতে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ দুটি কমিটি গঠন করেছেন।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির কাজ হচ্ছে, প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে কারা জড়িত, কীভাবে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে, কোন কোন মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে তা খুঁজে বের করা এবং এর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থাকলে এর শাস্তি কী হওয়া উচিত, তা নির্ধারণ করা।
ঢাকা জেলা ও দায়রা জজের নেতৃত্বে এ কমিটিতে থাকবেন নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আইন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন করে উপ-সচিব।
বুয়েটের অধ্যাপক ড. কায়কোবাদের নেতৃত্বে কমিটিতে থাকবেন বুয়েটের অপর অধ্যাপক সোহেল রহমান, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরে মহাপরিচালক, কম্পিউটার সোসাইটির একজন বিশেষজ্ঞ এবং সিআইডির ডিআইজি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা।
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষা বাতিল করে নতুন প্রশ্নপত্র দিয়ে পুনরায় পরীক্ষা নেয়া, প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় বিচারবিভাগীয় ও প্রশাসনিক তদন্ত কমিটি গঠন এবং প্রশ্ন ফাঁসের অপরাধ দমনে আইন প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে (১৪ ফেব্রুয়ার) বুধবার বিকেলে রিট আবেদনটি করা হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রশ্ন ফাঁসের বিভিন্ন প্রতিবেদন যুক্ত করে আদালতে আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আইনুন্নাহার সিদ্দিকা, সিকদার মাহমুদুর রাজি, মো. রাজু মিয়া ও নূর মোহাম্মদ আজমী।
রিটে বিবাদী করা হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব, আইন সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের ড্রাফটিং উইংয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্য প্রযুক্তি সচিব, বিটিআরসির সচিব-চেয়ারম্যান, বিটিসিএল প্রধান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক-চেয়ারম্যান, ঢাকা-রাজশাহী, কুমিল্লা-যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল সিলেট, দিনাজপুর উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং পুলিশের মহাপরিদর্শককে।
এফএইচ/জেডএ/আইআই