খালেদার জামিন আবেদনে আরও সময় লাগবে

জাহাঙ্গীর আলম
জাহাঙ্গীর আলম জাহাঙ্গীর আলম , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪০ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
ছবি-ফাইল

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে চার দিন ধরে কারাগারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তার পক্ষে রোববার উচ্চ আদালতে জামিনের বিষয়ে আপিল করার কথা ছিল। কিন্তু মামলার সার্টিফায়েড কপি না পাওয়ায় আজও খালেদার জামিন আবেদন করতে পারেনি আইনজীবীরা। তবে আগামীকালও (সোমবার) সার্টিফায়েড কপি পাবেন কিনা এ বিষয় সন্দেহ রয়েছে।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, আজ মামলার রায়ের সার্টিফায়েড কপি হাতে পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সার্টিফায়েড কপি প্রস্তুত না হওয়ায় আমরা কপি পাইনি। সার্টিফায়েড কপি হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উচ্চ আদালতে খালেদার জামিন আবেদন করব।

আদালত সূত্রে জানা যায়, খালেদার মামলার রায় ৬৩২ পৃষ্ঠার। রায়ের সার্টিফায়েড কপি লেখতে সময় লাগবে। সোমবারও সার্টিফায়েড কপি লেখা সম্পূর্ণ হতে নাও পারে। পরের দিন (মঙ্গলবার) আশা করা যায় সার্টিফায়েড কপি লেখা সম্পূর্ণ হতে পারে।

এর আগে রোববার সন্ধ্যায় আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ডিভিশন দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি-প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন।

খালেদার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া আদালতের জারিকারক আনিসকে সঙ্গে নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষর কাছে আদালতের ডিভিশনের আদেশ কারা কর্তৃপক্ষকে পৌঁছে দেন। এ সময় সানাউল্লাহ মিয়ার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ, জিয়া উদ্দিন জিয়া ও এম হেলাল উদ্দিন হেলাল।

এদিন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান জেলকোড অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে কারাগারে ডিভিশন দিতে জেল কোডের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে আদেশ দেন।

৮ ফেব্রুয়ারি দুদকের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। এই মামলায় অন্য আসামি খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

আদালত বলেছেন, বয়স ও সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় কম সাজা দেয়া হয়েছে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। রায়ের পরই নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে নেয়া হয় বেগম জিয়াকে। দণ্ডবিধি ১০৯ ও ৪০৯ ধারায় খালেদা জিয়াসহ বাকিদের সাজা দেয়া হয়। কারাদণ্ডের পাশাপাশি সব আসামিকে দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।

মামলায় মোট আসামি ছয়জন। তার মধ্যে তিনজন পলাতক। তারা হলেন- বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ৩২ জন। ১২০ কার্যদিবসের বিচারকার্য শেষ হয়েছে ২৩৬ দিনে। আত্মপক্ষ সমর্থনে সময় গেছে ২৮ দিন। যুক্তি উপস্থাপন হয়েছে ১৬ দিন এবং আসামিপক্ষ মামলাটির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উচ্চ আদালতে গেছেন ৩৫ বার।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় একটি মামলা করে দুদক।

২০১০ সালের ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

জেএ/জেএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।