হতাশ জুবায়েরের পরিবার
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইংরেজি বিভাগের ছাত্র জুবায়ের আহমেদ হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামিকে খালাস দেয়ায় হতাশ তার পরিবার। খালাসের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন জুবায়েরের বড় ভাই আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
অপরদিকে পাঁচজনের ফাঁসি এবং দু’জনের যাবজ্জীবন সাজা বহাল রাখায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন জুবায়েরের পরিবার। পরিবারের দাবি এ রায় যেন উচ্চ আদালতেও বহাল থাকে। এছাড়া পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করে রায় যেন দ্রুত বাস্তবায়ন হয় সে জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান তার পরিবার।
জুবায়েরের বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জুবায়ের হত্যা মামলায় চারজনকে খালাস দেয়ায় আমাদের পরিবার হতাশ। সবাই জানে এ আসামিরাও জুবায়েরকে হত্যা করেছেন। পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে পাওয়ার পর এর বিরুদ্ধে আপিল করবো।
তিনি আরও বলেন, হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের দণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচজনের ফাঁসি এবং দু’জনের যাবজ্জীবন সাজা বহাল রাখায় আমরা সন্তুষ্ট। পরিবারের দাবি এ রায় যেন উচ্চ আদালতে বহাল থাকে। তবে সবকিছু মিলিয়ে এ রায়ে আমাদের পরিবার সন্তুষ্ট নয়। এ রায়ে আমাদের পরিবার হতাশ।
উল্লেখ্য, বুধবার (২৪ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে জুবায়ের হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড ও দুজনের যাবজ্জীবন বহাল রাখেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত অপর চার আসামিকে খালাস দেয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া পাঁচজন হলেন- খন্দকার আশিকুল ইসলাম, রাশেদুল ইসলাম, জাহিদ হাসান, মাহবুব আকরাম ও খান মোহাম্মদ রইস। এদের মধ্যে রাশেদুল ইসলাম আপিল করেন, অপর চার আসামি পলাতক। আর যাবজ্জীবন বহাল থাকা দুজন হলেন ইশতিয়াক মেহবুব ও নাজমুস সাকিব।
খালাস পাওয়া চারজন হলেন- মাজহারুল ইসলাম, শফিউল আলম, কামরুজ্জামান ও অভিনন্দন কুণ্ডু। বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনের মধ্যে পলাতক ইশতিয়াক মেহবুব ছাড়া অপর পাঁচজন আপিল করেছিলেন।
আসামিরা সবাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী।
গত ৯ জানুয়ারি জুবায়ের আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষ হয়। ওইদিন রায়ের জন্য ২৩ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।
২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জুবায়ের আহমেদ হত্যা মামলায় পাঁচজনকে ফাঁসি ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দু’জনকে খালাস দেয়া হয়। ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ বি এম নিজামুল হক এ রায় ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি ছাত্রলীগ কর্মী জুবায়েরকে কুপিয়ে জখম করে তারই সংগঠনের অপর একটি পক্ষ। পরে তাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন রাতেই তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই ৯ জানুয়ারি ভোরে মারা যান জুবায়ের। ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন রেজিস্ট্রার হামিদুর রহমান আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
জেএ/এএইচ/এমএস