নোয়াখালীর গল্প শুনে হাসলেন খালেদা

জাহাঙ্গীর আলম
জাহাঙ্গীর আলম জাহাঙ্গীর আলম , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৩৭ পিএম, ১১ জানুয়ারি ২০১৮

‘নোয়াখালীর মানুষদের কখনো অবহেলা করবেন না। সাবেক ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নোয়াখালীর লোকদের ছাড়া চলতে পারে না।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে (জোকস করে) এভাবে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ।

মওদুদের মুখে নোয়াখালীর গল্প শুনে আদালত কক্ষে মুচকি হাসতে থাকেন খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়া ছাড়াও আদালতে থাকা আইনজীবী, পুলিশ ও সাংবাদিকরাও হাসতে থাকেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী মওদুদ আহমেদ বিচারককে উদ্দেশ্য করে (জোকস করে) বলেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন আহম্মেদ নোয়াখালীর কথা শুনে ঠাট্টা করেছেন। আমি নোয়াখালীর লোক দেখে আপনি অবহেলা করবেন না। বর্তমান সেনা প্রধান (জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক) আমার নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর কবির হাটের ছেলে। সাবেক ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নোয়াখালী থেকে সেনাপ্রধান বানিয়ে ছিলেন।

এরপর মওদুদ আহমেদ ৯ম দিনের মতো জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদার পক্ষে মুল যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন।
যুক্তিতে মওদুদ বলেন, রাজনৈতিক কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিচার প্রার্থী হিসেবে আপনার সামনে দাঁড়াতে হয়েছে। আর এ মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।

বিচারককে উদ্দেশ্য করে মওদুদ বলেন, কুয়েতের আমীর শহীদ জিয়ার নামে টাকা পাঠিয়েছেন। খালেদা জিয়া হচ্ছেন মরহুম জিয়াউর রহমানের স্ত্রী ও তারেক রহমান হচ্ছেন জিয়ার ছেলে। পিতা ও স্বামীর টাকা কেউ কি আত্মসাৎ করে?

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আরও বলেন, ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা কুয়েতের সরকার পাঠিয়েছেন। তা বেড়ে প্রায় ৬ কোটি টাকা হয়েছে। আত্মসাৎ তো দূরের কথা এই টাকা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আইনে মামলাটি টেকে না। কারণ মামলার কোথাও খালেদা জিয়ার সই নেই।

এরপর বেলা ২টা ৩০ মিনিটের দিকে মওদুদ আহম্মদ বিচারকে বলেন, আজকে মতো এখানে শেষ করতে চাই। আমার আর এক ঘণ্টা লাগবে। আজ আমাদের এক আইনজীবী মারা গেছেন। তার জানাজা পড়তে হবে।

এরপর বিচারক মওদুদের আবেদন মঞ্জুর করে পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের জন্য আগামী ১৬, ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। অপরদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাতেও যুক্তি উপস্থাপনের জন্য একই দিন ধার্য করেন আদালত।

এদিন বেলা ১১টা ৫ মিনিটে আদালতে উপস্থিত হন খালেদা জিয়া। জিয়া অরফানেজ ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দেন তিনি।

এরপর বেলা ১১টা ১০ মিনিটে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার পক্ষে নবম দিনের মতো যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার।

জমির উদ্দিনের যুক্তি উপস্থাপন শেষে আদালত ১৫ মিনিটের বিরতি দেন। বিরতির পর বেলা ১টার দিকে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন।

এর আগে ১৯ ডিসেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়। এ দিন রাষ্ট্রপক্ষ খালেদা জিয়াসহ সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন।

এরপর ২০, ২১, ২৬, ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর এবং ৩, ৪, ১০ ও ১১ জানুয়ারি খালেদার পক্ষে যুক্ত উপস্থাপন করেন তার আইনজীবীরা।

জেএ/এমআরএম/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।