রণদা প্রসাদ হত্যা : মাহবুবুরের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল
একাত্তরে দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা হত্যায় অভিযুক্ত টাঙ্গাইলের মো. মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। তার বিরুদ্ধে হত্যা,অপহরণ ও গণহত্যার তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যর আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই তিনটি অভিযোগ দাখিল করা হয়। আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউটর রানা দাসগুপ্ত।
এর আগে গত ২ নভেম্বর রণদা প্রসাদ সাহা হত্যায় অভিযুক্ত টাঙ্গাইলের মো. মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার পর তা প্রকাশ করে তদন্ত সংস্থা।
তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে যুদ্ধাপরাধের তিনটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান, জ্যেষ্ঠ সদস্য সানাউল হক।
হান্নান খান সাংবাদিকদের বলেন, আসামি মাহবুবুর রহমানের বাবা আব্দুল ওয়াদুদ মুক্তিযুদ্ধের সময় মির্জাপুর শান্তি কমিটির সভাপতি ছিলেন। আসামি মাহবুবুর রাহমান ও তার ভাই আব্দুল মান্নান সে সময় রাজাকার বাহিনীতে ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, আসামি এক সময় জামায়াতে ইসলামির সমর্থক ছিলেন। কিন্তু নির্দলীয়ভাবে তিন তিনবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থিতা করলেও প্রতিবারই পরাজিত হয়েছেন।
হান্নান খান তদন্ত প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে বলেন, আসামি মাহবুবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মে মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ২০-২৫ জন সদস্যকে নিয়ে রণদা প্রসাদ সাহার বাসায় অভিযান চালায়।
অভিযানে রণদা প্রসাদ সাহা, তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা, রণদা প্রসাদের ঘনিষ্ঠ সহচর গৌর গোপাল সাহা, রাখাল মতলব ও রণদা প্রসাদ সাহার দারোয়ানসহ ৭ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে সবাইকে হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্য নদীতে ফেলে দেয়। তাদের লাশ আর পাওয়া যায়নি।
তদন্তে মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে অপহরণ, হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও গণহত্যার তিনটি অভিযোগ আনা হয়। রণদা প্রসাদ সাহার পৈত্রিক নিবাস ছিল টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে। সেখানে তিনি একাধিক শিক্ষা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
এক সময় নারায়ণগঞ্জে পাটের ব্যবসায় নামেন রণদা প্রসাদ সাহা। থাকতেন নারায়ণগঞ্জের খানপুরের সিরাজদিখানে। সে বাড়ি থেকেই তাকে, তার ছেলে ও অন্যান্যদের ধরে নিয়ে যায় আসামি মাহবুবুর রহমান ও তার সহযোগীরা।
এফএইচ/এনএফ/আরআইপি