খালেদা দেরিতে আসায় বিচারক অসন্তুষ্ট
জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আদালতে দেরিতে হাজির হওয়ায় বিচারক অসন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন।
বুধবার বেলা ১১টা ৫২ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপারসন আদালত হাজিরা দিতে আসেন। খালেদা আদালতের আসার পর বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান দুপুর ১২টায় আদালতের এজলাস কক্ষে বসেন। এসময় বিচারক খালেদার উদ্দেশে বলেন, এভাবে সময় নষ্ট করলে চলবে না। আপনার হাজিরা সময় ছিল সাড়ে ৯টা, কিন্তু এখন বাজে ১২টা। আগামীকাল থেকে সাড়ে ১০টায় কোর্টে হাজির থাকতে হবে। এই সময় খালেদার আইনজীবীদের সঙ্গে বিচারকের বাকবিতণ্ডা হয়।
খালেদার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বিচারককে বলেন, রাস্তায় যানজট ছিল। তাই ম্যাডামের আসতে দেরি হয়েছে। তখন বিচারক খালেদার আইনজীবীকে বলেন, আপনারা তো সাড়ে ৯টায় আদালতে এসেছেন। উনার আসতে এতো দেরি হয় কেন?
এর জবাবে মোহাম্মদ আলী বলেন, এটা সামরিক আদালত না যে সঠিক সময় আদালতে হাজির হতে হবে।
তখন বিচারক বলেন, আপনার অষ্টম দিনের মত যুক্তিউপস্থাপন করছেন। আজকের মধ্যে আপনাদের যুক্তিউপস্থাপন শেষ করতে হবে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৮ম দিনের মত যুক্তি উপস্থাপন করছেন তার আইনজীবীরা। এছাড়া আজ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও যুক্তি উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
এর আগে ১৯ ডিসেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়। এ দিন রাষ্ট্রপক্ষ খালেদা জিয়াসহ সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন।
২০, ২১, ২৬, ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর এবং ৩ ও ৪ জানুয়ারি খালেদার পক্ষে যুক্ত উপস্থাপন করেন তার আইনজীবীরা। ৪ জানুয়ারি খালেদার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ না হওয়ায় ১০ ও ১১ জানুয়ারি পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় একটি মামলা করে দুদক।
২০১০ সালের ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া বাকি আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
এছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় আরও একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর সাবেক নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
জেএ/জেএইচ/আইআই