সোনালী, রূপালী ও জনতা ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৩৭ পিএম, ০৭ জানুয়ারি ২০১৮

রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, রূপালী ও জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার, অফিসার ও ক্যাশ অফিসার পদে নিয়োগ পরীক্ষার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে নিয়োগ পরীক্ষা নিতে গত বছরের ২৩ আগস্ট জারি করা প্রজ্ঞাপন কেন বে-আইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।

আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ সচিবসহ চারজনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আগামী শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির অধীনে এসব ব্যাংকের সমন্বিত নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল।

২০১৭ সালের পরীক্ষা বাতিল চেয়ে দায়ের করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রাশেদুল হক খোকন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম ও মির্জা সুলতান আল রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাতার হোসেন সাজু।

শুনানি শেষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাশিদুল হক খোকন জাগো নিউজকে বলেন, গত বছরের তিনটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আওতায় সোনালী, রূপালী ও জনতা ব্যাংকের যে নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল- সে বিষয়ে আদালত এই নির্দেশনা দিয়েছেন।

২০১৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি রূপালী ব্যাংক ৭০১টি শূন্য পদে অফিসার ও ক্যাশ অফিসার পদে নিয়োগে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়। ওই বছরের ২৬ জুলাই ৪২৩টি শূন্য পদে সিনিয়র অফিসার ও ৩ আগস্ট ৭৩৬টি শূন্য পদে অ্যাসিস্ট্যান্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়।

কিন্তু এসব নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির নিয়োগ পরীক্ষা না নিয়ে গত বছরের ২৩ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক ৮টি ব্যাংকের এক হাজার ৬৬৩টি সিনিয়র অফিসার (সাধারণ) পদের জন্য সমন্বিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়। এরপর ২৯ আগস্ট আবার তিন হাজার ৪৬৩টি অফিসার (সাধারণ) শূন্য পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়।

সর্বশেষ গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর দুই হাজার ২৪৬টি অফিসার (ক্যাশ) শূন্য পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে আগামী ১২ জানুয়ারি নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা।

রিটকারীদের আইনজীবী রাশেদুল হক খোকন জাগো নিউজকে বলেন, ২০১৬ সালের তিনটি ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা না নিয়ে গত বছরের যে তিনটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে সেগুলোর নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে ১২ জানুয়ারি। ২০১৬ সালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যারা আবেদন করেছিলেন, তাদের মধ্যে ২৮ আবেদনকারী গত বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের তিনটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন। সেই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত নিয়োগ পরীক্ষাসহ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সকল কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন।

আইনজীবী খোকন বলেন, গত বছরের বিভিন্ন সময়ে দেয়া এ তিনটি ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ হবে না এবং ২০১৭ সালে দেয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ার আগে ২০১৬ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থসচিব, ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির চেয়ারম্যান ও সদস্য সচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। নিয়োগ পরীক্ষার প্রার্থী বগুড়ার আসাদুজ্জামান, কুমিল্লার আবু বকরসহ ২৮ জন ২০১৭ সালের নিয়োগ পরীক্ষার সার্কুলার বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন।

আইনজীবী রাশেদুল হক খোকন বলেন, রাষ্ট্রয়াত্ত তিনটি ব্যাংকে ২০১৬ সালের প্রার্থীদের পরীক্ষা না নিয়ে ২০১৭ সালে আবার সার্কুলার জারি করায় আমরা রিট আবেদন করি। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত ২০১৬ সালের সার্কুলারে যারা আবেদন করেছেন তাদের পরীক্ষা কেন ২০১৭ সালের সার্কুলারের আগে নেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন এবং এ রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ২০১৭ সালের সার্কুলারের সবধরনের পদক্ষেপ গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

এফএইচ/বিএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।