সরকারের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের টানাপোড়েন নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:১১ পিএম, ০৩ জানুয়ারি ২০১৮
ফাইল ছবি

অধস্তন (নিম্ন) আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাবিধি নিয়ে সরকারের প্রকাশ করা গেজেট গ্রহণ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তাই গেজেট নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিচার বিভাগের যে টানাপোড়েন ছিল তা অবসান ঘটলো বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

তিনি বলেন, আমি বলবো অবশ্যই সরকারের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের কোনো টানাপোড়েন নেই।

বুধবার অ্যাটর্নি জেনারেল এর নিজ কার্যালয়ে বিধিমালার গেজেট নিয়ে শুনানির পর গণমাধ্যমকে এমনটি জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল।

গত ১১ ডিসেম্বর সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিচারকদের চাকরিবিধির গেজেট প্রকাশ করে। পরে তা সত্যায়িত (এফিডেভিট) করে আপিল বিভাগে জমা দেন রাষ্ট্রপক্ষ।

আজ দুপুরে ভারপ্রাপ্তপ্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ ওই গেজেট গ্রহণ করে আদেশ দেন।

আদেশে বলা হয়, ‘সুপ্রিম কোর্টের ‘সুপ্রিমেসি’ রেখে সরকার অধঃস্তন আদালতের যে শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধি প্রকাশ করেছে, তা গ্রহণ করেছে আপিল বিভাগ।’

এ বিষয়টির নিষ্পত্তি করে দেয়া হলেও যার সূত্র ধরে চাকরিবিধির বিষয়টি আদালতে এসেছিল, সেই মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণগুলো চলমান রেখেছেন আপিল বিভাগ।

অধস্তন (নিম্ন) আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধির ক্ষেত্রে যদি রাষ্ট্রপতি বা আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে মতের কোনো অমিল হয়, তাহলে সুপ্রিম কোর্টের মতামতই প্রাধান্য পাবে বলে জানান মাহবুবে আলম।

নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট গ্রহণ করে আপিল বিভাগের আদেশে পর অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, বাংলাদেশের অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির ব্যাপারে ইতোপূর্বে আমরা সময় নিয়েছিলাম। এ ব্যাপারে আইন যেটা তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। সেটা দাখিল করেছি। বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এটাকে গ্রহণ করেছেন।

তিনি বলেন, এখন থেকে এটা কার্যকর হবে। এতদিন নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি, তাদের চাকরি থেকে অপসারণ বা অন্যান্য বিষয়ে যে বিধানাবলী থাকার কথা ছিল সেগুলো ছিল না। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে এটাকে গ্রহণ করেছেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আদালত স্পষ্টভাবে দেখেছেন যে, নিম্ন আদালতের বিচারকদের ব্যাপারে অনুসন্ধান, তদন্ত, শাস্তি প্রদান, আপিল এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে সু্প্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করার বিধান রাখা হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা যদি রাষ্ট্রপতি বা আইন মন্ত্রণালয় এবং সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে মতে কোনো অমিল হয়, চাকরি বা অপসারণের ক্ষেত্রে তাহলে সুপ্রিম কোর্টের মতামতই প্রাধান্য পাবে বলেই উল্লেখ করা আছে।

মাহবুবে আলম বলেন, এটা নিয়ে অনেকে নানা রকম কলাম লিখছেন বা একটা টকশোতে বলছেন সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা খর্ব হয়েছে, এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। এই রুলসটা পড়লেই বোঝা যাবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শের বিধান রাখা হয়েছে।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মাসদার হোসেন মামলায় এটি কন্টিনিউয়াস ম্যান্ডামাস। যদি মাজদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো রকম মত দ্বৈততা দেখা দেয় বা কোনো রকম ডেট লক ক্রিয়েট হয়, সেক্ষেত্রে আবার এই মামলায় তারা নির্দেশ দেবেন। যেটাকে বলা হয় কন্টিনিউয়াস ম্যান্ডামাস। অর্থাৎ নতুনভাবে কোনো কিছু আর দায়ের করতে হবে না। এই মামলাতেই বিভিন্ন সময়ে প্রয়োজনে তারা আদেশ দিতে পারবেন। এজন্যই বলেছেন ফর দ্যা টাইমবিং। কিন্তু আমাদের রুলস গ্রহণের বিষয়ে টাইমবিং অ্যাপলিকেবল না। এটা নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।

এফএইচ/জেএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।