প্রধান বিচারপতি নিয়োগে লিগ্যাল নোটিশ
সংবিধান অনুযায়ী আইনজীবীদের মধ্য থেকে প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি কেন নিয়োগ দেয়া হবে না এ মর্মে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী। রোববার ডাক ও রেজিস্ট্রি যোগে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, কেবিনেট সচিব, আইন সচিব, রেজিস্ট্রি জেনারেল (সুপ্রিম কোর্ট) এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের প্রতি এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ জানান, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে লিগ্যাল নোটিশের জবাব চাওয়া হয়েছে। অন্যথায় মামলা দায়ের করা হবে। নোটিশে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের অভিজ্ঞ আইনজীবীদের মধ্য থেকে প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের বিচারপতি নিয়োগে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। অন্যথায় ৭২ ঘণ্টা পরে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে।
নোটিশের বিষয়ে আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, ‘সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী কমপক্ষে ১০ বছরের পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকলে তিনি প্রধান বিচারপতি বা সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেতে পারেন। কিন্তু ১৯৭২ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত এই ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগে আইনজীবীদের মধ্য থেকে সরাসরি কোনোও বিচারক নিয়োগ দেয়া হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবীদের মধ্য থেকে ৮০ শতাংশের ওপরে অতিরিক্ত হিসেবে বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হলেও সরাসরি নিয়োগ দেয়া হয়নি। এভাবে নিয়োগের ফলে সংবিধানের ১৯, ২৭, ২৮, ৩১ ও ৪০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আইনজীবীদের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তাদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে।’
ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, ‘হাইকোর্ট বিভাগ থেকে আপিল বিভাগে বিচারক নিয়োগ দিতে হবে কিংবা পদোন্নতি দিয়ে আপিলে নিয়ে যেতে হবে, এমন কোনোও বিধান সংবিধানে নেই। অথচ আপিল বিভাগে শতভাগ বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হচ্ছে হাইকোর্ট থেকে।
তাই এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যিনি প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন, তাকে চারবার শপথ নিতে হচ্ছে। অর্থাৎ একই ব্যক্তি পরপর চারটি পদ হোল্ড করেন। অথচ সাংবিধানিক বিধান থাকার পরও আইনজীবীদের মধ্য থেকে আপিল বিভাগে বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। তাই সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে নোটিশ পাঠিয়ে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলেছি।’
তবে এই সময়ের মধ্যে জবাব না পাওয়া গেলে আইনি পদক্ষেপ হিসেবে রিট দায়ের করা হবে বলেও তিনি জানান। নোটিশে বিচারক নিয়োগে ভারতের সংবিধানের ১২৪ অনুচ্ছেদ তুলে ধরে বলা হয়েছে, ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেতে হলে হাই কোর্টের বিচারক হিসেবে কমপক্ষে পাঁচ বছর অথবা আইনজীবী হিসেবে কমপক্ষে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।’
পাকিস্তানের সংবিধানের ১৭৭ অনুচ্ছেদ তুলে ধরে বলা হয়েছে, ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেতে হলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে কমপক্ষে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।’
তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সিনেটের সম্মতি সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি যেকোনোও ব্যক্তিকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেন বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এফএইচ/এমআরএম/আরএস/এমএস