গোয়েন্দাদের ব্যর্থতার কারণ খুঁজে বের করুন : হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৫৯ এএম, ২৭ নভেম্বর ২০১৭

বহুল আলোচিত পিলখানা ট্র্যাজেডির ঘটনায় করা হত্যা মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, এতো বড় ঘটনায় গোয়েন্দাদের ব্যর্থতার কারণ খুঁজে বের করুন।

আাদালত বলেন, দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা থাকা সত্ত্বেও গোয়েন্দারা কেন বিদ্রোহের তথ্য জানতো না, তার ব্যর্থতা খুঁজে বের করুন। এ সময় সেনা কর্মকর্তা ও বিডিআরের (বর্তমান বিজিবি) মধ্যে দূরত্ব দূর করতে সাত দফা সুপারিশ করেছেন হাইকোর্ট।

আদালতের সুপারিশগুলো হচ্ছে : ১. অপারেশন ডাল ভাতের মতো কর্মসূচি কোনোভাবেই যেনো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা পারিচালিত না হয়। এতে তাদের আচরণের ওপর প্রভাব ফেলে। ২. বিজিবির আইন দ্বারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও অধস্তন সেনাদের পেশাদার সম্পর্কের প্রকৃতি নিরূপন ও বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে হবে। ৩. বিজিবির যেকোনো চাহিদা থাকলে তা কোনো ধরনের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ব্যাতিরেকে বিজিবি হেড কোয়ার্টার টু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরাসরি সমাধান করতে হবে। ৪. বিজিবি বাহিনীতে এখনও গোপনে থাকা মতো পার্থক্য ও বিরোধ থাকলে তা নিরসনে বিজিবি মহাপরিচালককে পদক্ষেপ নিতে হবে। ৫. বিজিবি সদস্যদের ছুটি ও বকেয়া অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৬. বিজিবি’র অভ্যন্তরে যেকোনো বিষয়ে কোনো ধরনের মতপার্থক্য দেখা দিলে তা নিরসনে স্বরাষ্ট্র ও বিজিবি কর্তৃপক্ষকে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে। ৭. পিলখানা হত্যাকাণ্ডের আগে বিডিয়ারের নিজস্ব গোয়েন্দা ব্যর্থতার কারণ নিরূপনে কমিটি গঠনের সুপারিশ।

সোমবার সোমবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার দ্বিতীয় দিনের মতো রায় পড়া শুরু করেন।

হাইকোর্টের বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিশেষ (বৃহত্তর) বেঞ্চে মামলাটিতে দ্বিতীয় দিনের রায় পড়া শুরু হয়।

মামলা সংশ্লিষ্ট আইনজীবী, অ্যাটর্নি জেনারেল ছাড়া আদালতে কাউকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। পরিচয়পত্র দেখে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় স্বজনদের কাউকে রায় শোনার জন্য ভেতরে ঢোকানো হয়নি। তবে বিডিআর এর আত্নীয় স্বজনদের আদালতের বাইরে অবস্থান করতে দেখা গেছে।

এখন পর্যন্ত পড়া রায়ের পর্যবেক্ষণে নারকীয় এ হত্যাকাণ্ডকে নৃশংস ও বর্বরোচিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আদালত বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন ইপিআর পাকিস্তান বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত এই বাহিনী দেশে-বিদেশে সম্মানের সঙ্গে কাজ করেছে। কিন্তু ২০০৯ সালে পিলখানায় তৎকালীন বিডিআরের কিছু সদস্য আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। এই কলঙ্কচিহ্ন তাদের অনেক দিন বয়ে বেড়াতে হবে।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ওই হত্যাযজ্ঞে ৫৭ কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। এ হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত রায় দিয়েছিলেন। আজ হাইকোর্টের রায়ের মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচারপ্রক্রিয়ার দুটি ধাপ শেষ হতে যাচ্ছে।

রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিতে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদারে আইন-শৃংখলা বাহিনীর বাড়তি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পরিচয় পত্র প্রদর্শন ও যৌক্তিক কারণ ব্যতীত সুপ্রিমকোর্ট অঙ্গনে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

এফএইচ/এআরএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।