ঘোড়ামারা আজিজসহ ৬ জনের রায় বুধবার
একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা ও গাইবান্ধার সাবেক সংসদ সদস্য আবু সালেহ মুহাম্মদ আব্দুল আজিজ মিয়া ওরফে ঘোড়ামারা আজিজসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হবে বুধবার।
আব্দুল আজিজ ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মো. রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জু (৬১), মো. আব্দুল লতিফ (৬১), আবু মুসলিম মোহাম্মদ আলী (৫৯), মো. নাজমুল হুদা (৬০) ও মো. আব্দুর রহিম মিঞা (৬২)। ছয় আসামির মধ্যে মো.আব্দুল লতিফ কারাগারে আছেন। বাকি পাঁচ আসামি পালাতক রয়েছেন।
মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার জন্য এই দিন নির্ধারণ করেন। এর আগে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক শেষে গত ২৩ অক্টোবর মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষামাণ রাখা হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও শেখ মোশফেক কবির। আসামিদের মধ্যে লতিফের পক্ষে আইনজীবী খন্দকার রেজাউল এবং পলাতক আসামিদের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম ও মো. শাহিনুর ইসলাম।
গত ১২ অক্টোবর ৬ আসামির বিরুদ্ধে আবারও (আর্গুমেন্ট) যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আজ (২২ অক্টোবর) দিন ঠিক করেছেন পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনাল। ২২ ও ২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য (সিএভি) অপেক্ষমাণ রাখেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে গত ৯ মে এই মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন চেয়ারম্যান বিচারপতি মরহুম আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল রায়ের জন্য অপেক্ষামাণ রেখেছিলেন। এরপর ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান ও সদস্য বিচারক নিযোগ দিয়ে (১১ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন হওয়ায় মামলাটি ফের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে গত ১৬ এপ্রিল মামলায় প্রসিকিউশনের আনা সব সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরার কার্যক্রম শেষ করার পর যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ৮ মে দিন নির্ধারণ করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। ওই দিন ট্রাইব্যুনালের নির্ধারিত দিনে ঘোড়ামারা আজিজসহ আসামিদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগের বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করে প্রসিকিউশন। পরে ৯ মে আসামিপক্ষের আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম পাল্টা যুক্তিতর্ক শেষ করেন। উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হওয়ার পর রায় ঘোষণার জন্য মামলাটি অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন আদালত।
জানা গেছে, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুল আজিজ মিয়া ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চার দলীয় জোটের অধীনে জামায়াত থেকে গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জ-১ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাসহ ১৩টি মামলা হয়। সুন্দরগঞ্জ থানা শাখার জামায়াতের সক্রিয় সদস্য রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জুর বিরুদ্ধে দু’টি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা জামায়াত নেতা আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় মানবতাবিরোধী অপরাধসহ তিনটি মামলা রয়েছে।
আবু মুসলিম মোহাম্মদ আলী মুক্তিযুদ্ধের আগে ইসলামী ছাত্র সংঘের নেতা ছিলেন। পরে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তার বিরুদ্ধে দু’টি মামলা হয়। ১৯৭০ সাল থেকে জামায়াতের কর্মকাণ্ডে জড়িত নাজমুল হুদার বিরুদ্ধেও দু’টি মামলা রয়েছে। আব্দুর রহিম মিঞা মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতের কর্মী ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন, এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে।
এফএইচ/এনএফ/এমএস