লেকহেড স্কুল খুলে দেয়ার নির্দেশ আরও ১০ দিন স্থগিত
জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে বন্ধ থাকা রাজধানীর গুলশান ও ধানমন্ডির লেকহেড গ্রামার স্কুলের দু’টি শাখা খুলে দেয়ার জন্য হাইকোর্টের দেয়া আদেশ আগামী ১০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আগামী ১০ দিন স্কুলের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
ফলে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতের রায়ই বহাল রইল। এর আগে গত ১৫ নভেম্বর হাইকোর্টের দেয়া আদেশ আজ রোববার পর্যন্ত স্থগিত করেছিলেন চেম্বার জজ আদালত।
সেই সঙ্গে লেকহেড স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের কেউ জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত কি না- সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বহিনীকে একটি প্রতিবেদন অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে দিতে বলা হয়েছে।
রোববার আপিল বিভাগের নিয়মিত পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল করার জন্যও বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী ৩০ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দনি ধার্য করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেৃতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অন্যদিকে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার, অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু। তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার আখতার ইমাম ও ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম।
ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম জাগো নিউজকে বলেন, লেকহেড গ্রামার স্কুল খুলে দিতে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেছিলেন চেম্বার জজ আদালত। আজ ওই আদেশের মেয়াদ আপিল বিভাগ আরও ১০ দিন বাড়িয়েছেন।
তিনি জানান, সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল করতেও বলা হয়েছে। অপর এক আদেশে বলা হয়েছে, লেকহেড স্কুলের কোনো শিক্ষক-কর্মচারীদের কেউ জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত কি না সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বহিনীকে একটি প্রতিবেদন অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে জমা দিতে।
গত ১৪ নভেম্বর লেকহেড গ্রামার স্কুলের ধানমন্ডি ও গুলশান শাখা ২৪ ঘন্টার মধ্যে খুলে দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত বুধবার লেকহেড স্কুল খুলে দিতে হাইকোর্টের আদেশ আজকের দিন পর্যন্ত স্থগিত করেছিলেন চেম্বার আদালত। আজ ওই আবেদনের ওপর শুনানি নিলেন আদালত।
গত ৬ নভেম্বর ধানমন্ডি ও গুলশানের দু’টি শাখাসহ লেকহেড স্কুলের সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সালমা জাহানের সই করা চিঠিতে ঢাকা জেলা প্রশাসককে এ নির্দেশ দেয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, এই প্রতিষ্ঠানটি সরকারের অনুমোদন নেয়নি।
এ ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ধর্মীয় উগ্রবাদ, উগ্রবাদী সংগঠন সৃষ্টি, জঙ্গি কার্যক্রমে পৃষ্ঠপোষকতাসহ স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত।
জানা গেছে, এই প্রতিষ্ঠানটির মূল উদ্যোক্তা ও পৃষ্ঠপোষক রেজোয়ান হারুন সম্প্রতি লন্ডন থেকে ঢাকায় এসে লাপাত্তা হয়ে যান। এখনও পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। রেজোয়ান হারুনের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে অর্থায়ন ও মদদের অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদনে রেজোয়ান হারুনকে আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা দেয়া হয়।
২০০৬ সালে ধানমন্ডির ৬/এ সড়কে প্রতিষ্ঠিত হয় লেকহেড গ্রামার স্কুল।
গুলশানে এই স্কুলের আরও দু’টি শাখা আছে।
এফএইচ/এনএফ/আইআই